শবে কদরের গুরুত্ব ও ফজিলত-শবে কদরের রাতে করণীয়

সুতরাং আপনি শবে কদরের রাতের লাইলাতুল কদরের রাতে সূরা কপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনারা অনেকেই জানেন না যে শবে কদরের গুরুত্ব ও ফজিলত কি এবং শবে কদর রাতে করনীয় যে সকল আমলগুলো রয়েছে সেগুলো কিভাবে করতে হয়।আশা করি আপনারা google এর মাধ্যমে সঠিক জায়গায় প্রবেশ করেছেন। তাহলে আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলের মধ্যে আপনাদেরকে শবে কদরের গুরুত্ব ফজিলত এবং শবে কদরের রাতে করনীয় বিষয়গুলো জানাবো। 

শবে কদরের গুরুত্ব ও ফজিলত

পোস্ট সূচিপত্রঃ

ভূমিকাঃ শবে কদরের গুরুত্ব ও ফজিলত-শবে কদরের রাতে করণীয়

শবে কদরের রাত হল অন্য সকল মাসের রাতের চাইতে অন্যরকম একটি রাত এই রাত্রি হাজার মাস এবাদত করার চাইতেও শ্রেষ্ঠ বিশেষ করে শবে কদরের রাতে নফল ইবাদত বা নফল আমল গুলো বেশি বেশি করলে স্বভাব বেশি পাওয়া যায় শবে কদরের রাতে আল্লাহ ওই সকল ব্যক্তিদের বেশি সম্মানিত করেন যাদের কোরআনের সাথে বেশি সম্পর্ক রয়েছে। 

শবে কদরের রাত এতটাই সম্মানিত রাত যে আমাদের প্রিয় নবীজি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ রাতকে পাওয়ার জন্য তার উম্মতদেরকে রমজানের শেষ দশটি রাতের মধ্যে বিজোড় পাঁচটি রাতকে তালাশ করতে বলেছেন এবং যারা মসজিদে এতেকাফ করবেন তাদের জন্য এই পাঁচটি রাত অবশ্যই সম্ভ্যাব্য তাই এই শবে কদরের রাত বা লাইলাতুল কদরের রাত পেতে হলে সকলকে এতেকাফের জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন।

শবে কদরের রাতে কি কি আমল করব

বন্ধুরা শবে কদরের রাতে বিশেষ যে আমলগুলো আপনার জন্য অপরিহার্য বা আপনার ভাগ্যকে পরিবর্তন করতে পারেন না জেনে আপনাকে এ রাতে যে সকল আমলগুলো করতে হবে। এ রাতে আমল করার মাধ্যমে বা নফল ইবাদতের মাধ্যমে আপনি আল্লাহর সেই সকল প্রিয় বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন যাদেরকে আল্লাহ তা'আলা বেশি সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছেন। 

এ রাতে যে সকল ব্যক্তি শবে কদরের রাত বা লাইলাতুল কদরকে তালাশ করবে এবং আল্লাহর রাজি খুশির জন্য সারারাত নফল ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকবে আল্লাহ তাআলা ও সকল ব্যাক্তিদের সমস্ত জিন্দেগির গুনা খাতা মাফ করে দিয়ে তাদেরকে জান্নাত দান করবেন। তাহলে এবার আমরা চলুন জেনে আসি যে শবে কদরের রাতে কি কি আমল করব।

  • শবে কদরের রাত্রিতে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে হলে আমাদেরকে প্রচুর পরিমাণে বা বেশি করে নফল নামাজ আদায় করতে হবে যাকে আমরা বলে থাকি শবে কদরের নামাজ বা লাইলাতুল কদরের নামাজ।
  • আমাদের বেশি বেশি আল্লাহর প্রতি জিকির আজগার পাঠ করতে হবে তন্মধ্যে আমাদেরকে বেশি বেশি আল্লাহর দরবারে ইস্তেগফার পাঠ করতে হবে যে সকল জিকির গুলো আল্লাহর কাছে বেশি পছন্দনীয় সেগুলো হলো আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, সুবহানাল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, এবং আস্তাগফিরুল্লাহ এ সকল জিকির গুলো পাঠ করতে হবে। (কেননা এই সকল জিকির গুলি করলে ফেরেশতারাও বিপাকে পড়ে যান যে তারা কি পরিমাণ সব লিখবেন এ সকল জিকির গুলি করলে স্বয়ং আল্লাহ তা'আলা নিজেই তার বান্দাদেরকে ফল দিবেন)
  • এই রাত্রিতে আপনারা যত পারবেন দোয়া ইউনুস পাঠ করবেন দোয়াটি হল (লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতুম মিনাজ জোয়ালিমিন)।
  • শবে কদরের রাতে কি কি আমল করব তা জেনে নিয়ে আপনি পাঠ করতে পারেন যে দোয়াটি সেটি হল সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম। এ দোয়াটিতে আল্লাহ তালার মাহাত্মতা আল্লাহর চাইতে আর বড় কে আছে এবং আল্লাহর প্রশংসা ঘোষণা করা হয়।
  • বিভিন্ন জিকির এর পাশাপাশি আপনারা দরুদ শরীফ, সূরা ইখলাস ও সাইয়েদুল ইস্তেগফার বেশি করে পাঠ করতে পারেন।
  • আপনারা বিতরের তিন রাকাত নামাজ আদায় করার পূর্বে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতে পারেন।
  • পরের দিনের রোজা রাখার জন্য সাহরি খাওয়ার পূর্বেই আপনি মহান নিকট দুই হাত তুলে তার কাছে দোয়া করতে পারেন কেননা এর রাত্রি হল দোয়া কবুলের রাত।

লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস

বন্ধুরা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এই লাইলাতুল কদরের রাত বা শবে কদরের রাত সম্পর্কে আমাদেরকে বেশ কিছু হাদিস সম্পর্কে অবগত করে গেছেন যে হাদীসগুলো আমরা অনেকেই জানিনা আজ আমরা আচরণ তাহলে এক পলকে সে হাদিসগুলো দেখে নেওয়া যাক।

  1. হাদিস শরীফে বর্ণিত রয়েছে যে শবে কদরের রাত্রিতে ফেরেশতাদের সরদার হযরত জিবরাঈল (আঃ) ফেরেশতাদের বিরাট একটি দল নিয়ে পৃথিবীতে আগমন করেন এবং যত সকল মুসলমান নর নারী পুরুষ নামাজরত অবস্থায় থাকে তাদের জন্য রহমত বয়ে নিয়ে আসেন
  2. রাসূল (সাঃ) এরশাদ করেছেন তোমরা যদি শবে কদরের রাত্রি পেতে চাও তাহলে রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের বিজোড় পাঁচটি রাতকে তালাশ করতে থাকো। (সহিহ মুসলিম হাদিস নংঃ ১১৬৯)।
  3. হযরত আবু হোরায়রা রাঃ হতে বর্ণিত রাসূল সাঃ এরশাদ করেছেন যে, তোমরা যদি তোমাদের আসল ঠিকানা বা কবরকে যদি আলোকময় ই করে তুলতে চাও তাহলে তোমরা লাইলাতুল কদরের রাত্রি বা শবে কদরের রাত্রিতে জাগ্রত অবস্থায় আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকো। 
  4. এবং তিনি আরও এরশাদ করেছেন যে, যদি কোন ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে নেক নসিহতে লাইলাতুল কদরের রাত্রি বা কেমন লাইন অতিবাহিত করে তবে তার পূর্বের যত সকল গুনাহ রয়েছে সেগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে। (বুখারী শরীফ হাদিস নংঃ ৬৭২)।
  5. একদিন হযরত ওবায়দা রাঃ নবী করীম সাঃ এর কাছে শবে কদরের রাত্রি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন তখন তিনি সে সাহাবী কে বললেন যে রমজান মাসের শেষ দশটি রাতের বিজোর পাঁচটি রাতগুলোকে তোমরা তালাশ করতে থাকো তাহলে তোমরা শবে কদরের রাত্রি পেয়ে যেতে পারো। (বুখারী শরীফ হাদিস নংঃ 2017)।
  6. হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন যে আমি একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু সালামকে জিজ্ঞাসা করলাম হে আল্লাহর রাসূল আমি যদি কদরের রাতে সম্পর্কে অবহিত হতে পারি তবে আমি সে রাত্রিতে কি করব তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত আয়েশা (রাঃ) কে এই দোয়া পাঠ করার জন্য শিখিয়ে দিলেন। দোয়াটি হল ঃ আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা'ফু আন্নি। (তিরমিজি শরিফ হাদিস নংঃ ৩৫১)

শবে কদরের গুরুত্ব ও ফজিলত

লাইলাতুল কদরের বা শবে কদরের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক। এই রাতে সম্পর্কে এতটাই গুরুত্ব যা বলে শেষ করা যাবে না। শবে বরাত ও শবে বরাতের বিভিন্ন যে সকল হাদিস রয়েছে সে হাদীসগুলো বর্ণনা নিয়ে হাদিস বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যে পরিমাণ সংশয় রয়েছে লাইলাতুল কদরের রাত্রি জাগরণ সম্পর্কে তার কোনই অবকাশ নেই। চলুন তাহলে নিচে আমরা এবার শবে কদরের বা লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জেনে আসি।

আরো পড়ুনঃ দোয়া কবুল হওয়ার কারণ-নামাজে ভুল হলে করণীয়

পবিত্র কোরআনে এবং বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য হাদিস ও রাসূল সাল্লাল্লাহু লাইলাতুল কদরের জন্য গৃহীত কর্মতৎপরতার গুরুত্ব বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। এ সময় তো রজনীর গুরুত্ব সম্পর্কে মহান আল্লাহ তাআলা আল কুরআনে একটি সূরা নাযিল করেছেন যে সূরাটির নাম হল সূরা আল কদর। সম্পূর্ণ পুরো রমজান মাসের মধ্যে শেষ দশকের বেজোড় পাঁচটি রাতের মধ্যে একটি রাত রয়েছে সেটা হল লাইলাতুল কদরের রাত আর এই রাত এতটাই উত্তম ও কল্যাণময় রাত্রি যা সম্পর্কে এ সূরাটির মধ্যে সমস্ত কিছু বর্ণনা দেওয়া আছে। কদরের রাত হল হাজার মাস থেকেও শ্রেষ্ঠতম একটি রাত (সূরা আল কদর, আয়াত নংঃ ১-৩)

লাইলাতুল কদরের রাত্রি পালন করলে বান্দার যে সকল ফজিলত গুলো পেয়ে থাকে তা হল। এই রাত্রটি হল হাজার মাসের চাইতেও শ্রেষ্ঠতম । এই রাতেই অফিস থেকে আমাদের প্রিয় নবীজির কাছে কুরআন অবতীর্ণ হয় এ রাতে ফেরেশতাগণ আল্লাহর বন্ধুদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে থাকে ফজর পর্যন্ত রহমতের ফেরেশতারা আসমান হতে জমিনে অবতরণ করে আল্লাহর যে সকল থাকে তাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করতে থাকে। লাইলাতুল কদরের যে সকল ফজিলত গুলো রয়েছে সেগুলো হল ঃ

আপনি যদি লাইলাতুল কদরের রাত্রি এর বিশেষ ফজিলত গুলো জানেন তাহলে আপনি কখনোই এ রাত্রিটি মিস করবেন না। এ রাতে আল্লাহ তাআলার কাছে যদি ইবাদতে দাঁড়িয়ে তার ইবাদত পালন করে দুই হাত তুলে মরে যাতে আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়া যায় তাহলে তিনি এ রাত্রিতে বান্দার গুনাহ খাতা মাফ করে দেন। এ রাত্রিটি সম্পর্কে মহান আল্লাহ তাআলা কোরআনের মধ্যে বলেছেন যে "তারা রাত্রি যাপন করে রবের উদ্দেশ্যে সেজদা মূলত হয়ে ও দাঁড়িয়ে থেকে" (সুরা ফুরকান আয়াত নংঃ 64)

শবে কদরের রাতে কোন সূরা পড়তে হয়

যেহেতু শবে কদরের রাত হাজার মাসের চাইতেও শ্রেষ্ঠতম একটি রাত এই রাতের মর্যাদা হাজার মাসের চেয়েও বেশি। এই রাতে যে সকল বন্দনা আল্লাহর ইবাদতে বন্দিগিতে মশগুল থাকবে তাদের পেছনের সমস্ত গুনাহ গুলো মাফ করে দেয়া হবে। বর্তমান সময়ের একটি প্রচলিত প্রশ্ন হল শবে কদরের রাতে কোন সূরা পড়তে হয়? আসল বিষয় হলো হাদিসে এ রাতে নফল সালাত বা নফল নামাজ আদায়ের কথা বলা হয়েছে সে ক্ষেত্রে সূরা ফাতিহা ছাড়া নির্দিষ্ট কোন সূরা পড়ার কোন নিদর তেলাওয়াত করতে পারেন এরকম কোন কথা নেই সুরা ফাতেহার পর পবিত্র কোরআন হতে আপনি পাঠ করতে পারেন সে সূরাটি আপনি পাঠ করবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, "কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্য সহজ করা হয়েছে তোমরা শুধু ততটুকুই তেলাওয়াত করতে থাকো"(সূরা মুজাম্মিল আয়াতঃ ২০)।

আরো পড়ুনঃ নামাজ কবুল হওয়ার কারণ-নামাজে ভুল হলে করণীয় জেনে নিন

তবে প্রসঙ্গত ভাবে যদি কেউ এই শবে কদরের রাতে নামাজে বিশেষ কোন সূরা তেলাওয়াত অনেকে সুন্নতে মুয়াক্কাদা বলে মনে করে এবং সেই নির্দিষ্ট কোন সূরা পড়াকে সে নিয়মে পরিণত করে তাহলে সেটি বিদআত হিসেবে গণ্য হবে কেননা হাদিসে এখন পর্যন্ত এমন কোন সূরার নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি সুতরাং আমাদের জন্য তা নির্দিষ্ট নয়। রাসূল সাঃ বলেন যে ব্যক্তি দিনের অন্তর্ভুক্ত নয় এবং এমন কোন নতুন জিনিস চালু করল তা তার জন্য পরিত্যাজ্য (সহীহ বুখারি হাদিস নং ২৬৯৭)।

আরেক হাদিসে নবীজি বলেছেন, যে ব্যক্তি এমন আমল করল যার ব্যাপারে আমার কোন নির্দেশ নাই তা প্রত্যাখ্যাত।(সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস নংঃ ২৫৪৮৯)

শবে কদরের রাতের ইবাদত

শবে কদরের রাত্রিতে কিভাবে ইবাদত করবেন আপনারা অনেকেই জানেন না যে ইবাদত করার কোন নিয়ম আছে কিনা আসলে শবে কদরের রাতে যেভাবে ইবাদত করলে আপনার জন্য সহজ হবে সেই বিষয়গুলি আমরা নিচে জানাতে চলেছি। রমজানের শেষ দশকের প্রতিটি বিজোড় রাতে একজন মুসলিমের দায়িত্ব এই শ্রেষ্ঠতম রজনী উত্তম রাতের খোঁজ করা।

আপনার যেসকল ব্যক্তি এই রাতে যেভাবে এবাদত করবেন তাহলোঃ

  1. প্রথমত রাত ১০ টা থেকে আপনি আপনার টিভি মোবাইল ফোন ইত্যাদি থেকে বিরত চলে যান।
  2. যদি আপনার বেশি গরম লেগে থাকে তাহলে আপনি গোসল করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করে ইবাদতের নিয়তে মসজিদে বা বাসায় বসে যেতে পারেন।
  3. রাত ১২ টা হতে আপনি পবিত্র আল-কোরআন পাঠ করতে পারেন কেননা এ রাত্রে কোরআন পাঠ করা এতটাই জরুরী কেননা এই রাত্রে পবিত্র কুরআন নাযিল হয়েছে এবং এটা কোরআন নাজিলের মাস।
  4. বেশি বেশি আপনি নফল নামাজ বা হাজতের নামাজ পড়তে পারেন।
  5. অতঃপর আপনি রাত ১ টা হতে রাত্রি ২ টা পর্যন্ত আল্লাহর জিকির আজগারে মশগুল থাকতে পারেন।
  6. এরপর আপনি রাত্রি ২ টা হতে রাত্রে ৩ টা পর্যন্ত তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে পারেন এবং আপনি যথেষ্ট পরিমাণে সময় যদি পেয়ে থাকেন তাহলে আপনার রূপ ও সিজদায় সে সময়টুকু ব্যয় করুন পারলে সিজদায় গিয়ে আল্লাহর কাছে আপনি দোয়া করতে পারেন।
  7. এবার আপনি ৩ রাকাত বিতরের নামাজ পড়ুন।
  8. তারপরে এবার আপনি আল্লাহর দরবারে আপনার দুই হাত তুলে আপনার মনের যত কথা আছে এবং আপনার আত্মীয়-স্বজন যারা মৃত অবস্থায় চলে গিয়েছে তাদের জন্য আপনি আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে দোয়া করতে পারেন এবং আপনার গুনাহ মাফের জন্য আপনি মালিকের দরবারে বারবার বিরতি করতে পারেন।
  9. তারপরে দ্বীনের জন্য রোজা রাখার উদ্দেশ্যে সেহরি খেয়ে ফজরের নামাজ আদায় করতে পারেন।

শবে কদরের ইস্তেগফার

শবে কদরের রাত্রিতে আপনি বেশি বেশি ইস্তেগফার নামাজ পড়ুন ইস্তেগফার পাঠ করার অর্থ হল আপনি আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করছেন এবং তার কাছে আপনি আপনার পূর্বে যে সমস্ত পাপ কাজে লিপ্ত ছিলেন বা গুনাহ করেছেন সে সমস্ত গুনাহের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আপনি তার কাছে অনুতপ্ত। 

আরো পড়ুনঃ ঘুমানোর সময় ও ঘুম থেকে ওঠার পর যে দোয়া পড়তে হয়

তাই এই শবে কদরের রাত্রিতে আপনি যতটুকু সম্ভব বেশি বেশি ইস্তেগফার মাঠ করতে থাকুন কেননা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ তিনি নিয়মিত কমপক্ষে 70 বার ইস্তেগফার পাঠ করতেন সে অনুযায়ী আমাদেরকে তার চেয়ে বেশি পাঠ করতে হবে তাই শুধু শবে কদরের রাত্রিতে নয় নিয়মিত ইস্তেগফার পাঠ করা অভ্যাস গড়তে থাকুন।

শবে কদরের আমল কোনগুলো

শবে কদরের আমল সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা একটি মহিমান্বিত রাত সম্পর্কে বলেছেন যে রাত্রির মাহাত্ম্য দা হাজার মাসের চাইতেও উত্তম তিনি শবে কদরের রাতকে এতটাই সম্মানিত করেছেন যে কুরআনে রয়েছে এ রাত্রি হল লাইলাতুল কদরের রাত বা শবে কদরের অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা বলেছেন নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি এই মহিমান্বিত রাত্রিতে। 

আপনি কি জানেন এ মহিমান্বিত কদরের রাত কি? শবে কদরের রাত হল হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ একটি রাত।এ রাতে আল্লাহ তাআলা তার নিযুক্ত ফেরেশতা সকল ফেরেশতাদের সরদার হযরত জিবরাঈল (আঃ) কে পৃথিবীতে অবতরণ করে আল্লাহ তা'আলা অনুমতি নিয়ে পৃথিবীতে শান্তির বার্তাবাহক হিসেবে তিনি শান্তি বয়ে নিয়ে আসেন এবং শবে কদরের রাত্রে একজন বান্দার জন্য আল্লাহ তা'আলা তার ভাগ্যকে পরিবর্তন করে দেন। 

সকল সৃষ্টিকুলের ভাগ্য এই বিশেষ রাত্রিতে নির্ধারিত হয় যা পরবর্তী রমজান মাস আসা পর্যন্ত বাস্তবায়িত হতে থাকে। এ দায়িত্বশীল ফেরেশতাদের কাছে রহমত ও বরকত হস্তান্তর করা হয়। যার ফলে তারা এই কদরের রাতে আসমান হতে জমিনে নেমে আসে এবং জমিনের সকল সৃষ্টিকুলের প্রতি অসংখ্য নিয়ামত রহমত ও বরকত বর্ষণ করতে থাকেন।

শবে কদরের যেসব আমল করা যায়

শবে কদরের রাত্রিতে যেসব আমল করা যায় তার মধ্যে কুরআন তেলাওয়াত এবং হাদিসের আলোকে আল্লাহ একজন প্রিয় বান্দা হয়ে পড়তে পারা একটি অনন্য ও অসাধারণ একটি নিদর্শন। যদি আপনি সারা জীবনে অসংখ্য গুনাহ এর কাজে লিপ্ত থাকেন বা গুনাহের কাজ করে থাকেন তো তাহলে এই বিশেষ ও মহীমান্বিত লাইলাতুল কদরের রাত্রিতে আপনি যদি আল্লাহর কাছে দুই হাত তুলে মোনাজাত করে তার ইবাদত বন্দেগীতে কাটিয়ে তাকে রাজি খুশি করাতে পারেন এবং আপনি কান্নাকাটির মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে তার একজন ঈমানদার বান্দা হয়ে উঠতে পারেন তাহলে এই সবে কদরের রাত্রে বেলায় নতুন কদরের রাত্রে আল্লাহ তায়ালা আপনার জন্য তার রহমত এবং বরকতের দরজা খুলে দেন।

সারারাত আপনি এবাদত ও বন্দেগী করার জন্য আপনি আপনার আত্মীয়-স্বজনের জন্য এ রাত্রিতে দোয়া করতে পারেন। আপনি আপনার জীবনের যতই গুনাহ করে থাকেন না কেন একবার শুধু আপনি যদি এ রাত্রিতে আল্লাহর কাছে দুই হাত তুলে মোনাজাতে কান্নাকাটি করতে পারেন এবং এই একটি রাত যদি আপনার জীবনে লেগে যায় তাহলে আল্লারতায়ালা আপনার সারা জীবনের গুনাহ মাফ করে দিতে পারেন। 

আরো পড়ুনঃ ইসলামিক উপায়ে বিয়ে করার ১০ টি উপকারিতা জেনে নিন

সারারাত ইবাদতের মধ্যে কাটানোর পর আল্লাহ আপনার প্রতি যদি সন্তুষ্ট হয়ে যান এবং মোনাজাত শেষ করে পরবর্তী রোজা রাখার সাহারি খেয়ে ফজরের নামাজ পড়ে নিতে পারেন এবং আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে গুনাহ মাফ চাইতে পারেন তাহলে আপনার জন্য এই রাত্রিতে আপনি যে আমল করবেন তা আপনার জন্য কবুল হয়ে যেতে পারে তাহলে আপনি এ রাত্রিতে প্রত্যেকটা আমল সুন্দর করে শবে কদরের রাতের কদরের রাতে পালন করতে পারেন এর পরিবর্তে আপনি আল্লাহর দরবারে একটি অত্যন্ত প্রিয় ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠবেন এবং অশেষ সওয়াব লাভ করবেন।

শবে কদরের যেসব আমল করা যায় তার মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা জাহান্নামের ভালো বা শাস্তি থেকে আপনাকে রক্ষা। তাই বেশি করে এ রাতে আস্তাগফিরুল্লাহ বা ইস্তেগফার বেশি বেশি পাঠ করতে পারেন। সেই সাথে আপনি সন্ধ্যায় গোসল করে পবিত্র হয়ে নিতে পারেন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পোশাকাদি পরিধান করে এই দীর্ঘ রাত্রি কোরআন তেলাওয়াত নফল নামাজ এবং বিভিন্ন জিকির আজগার দরুদ শরীফ সূরা ইখলাছ ও তাহাজ্জুদের নামাজ এবং সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠ করে এই রাত্রি জাগরণ করতে পারেন।

শবে কদরের আমল যেই নিয়মে করবেন

শবে কদরের রাতে যে নামে আমল করা উচিত যদি সেটি ঠিক রাখতে পারেন তাহলে আপনার প্রতি আল্লাহর রহমত বরকত দুটি বর্ষিত হবে শবে কদরের রাতে একজন মুসলিম হিসেবে আপনার দায়িত্ব এমনভাবে আল্লাহর কাছে ইবাদতে আপনি নিজেকে সঁপে দেন বা মজগুল থাকা উচিত যেভাবে আল্লাহ তা'আলা আপনার প্রতি রাজি খুশি হবেন। 

আর আল্লাহকে রাজি খুশি করতে হলে তার নেয়ামত এবং তার প্রশংসা বেশি বেশি করতে হবে এবং যে নিয়মগুলো করে আপনি আমলগুলো করলে এই শবে কদরের রাত্রেবেলা নতুন কদরের রাত্রে অধিক পরিমাণে সওয়াব পেতে পারেন এবং আল্লাহর প্রিয় বান্দা হিসেবে নিজেকে নির্ধারণ করতে পারেন চলুন তাহলে এবার আমরা শবে কদরের আমল যেই নিয়মে করা উচিত বা যে নিয়মে করবেন তা নিয়ে নিচে বিস্তারিত শুরু করা যাক।

  • শবে কদরের রাত্রে বা লাইলাতুল কদরের রাত্রে আপনি অধিক সময় নিয়ে মহিমান্বিত ঐশী গ্রন্থী আল কোরআন তেলাওয়াত করতে পারেন।
  • বেশি করে নফল ইবাদত এবং সালাতুল হাজত এর নামাজ আদায় করতে পারেন।
  • রাতের দীর্ঘ সময় ধরে আপনি আল্লাহ তাআলার প্রতি জিকির-আজগার করতে পারেন।
  • আপনি লাইলাতুল কদরের রাত্রে কিভাবে আল্লাহর প্রতি জিকির করবেন তা হল সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহু আকবার এগুলি বেশি বেশি পাঠ করবেন কেননা আল্লাহ তাআলা এইগুলি সব একমাত্র মহান রব ছাড়া আর কেউ দিতে পারবে না এমনকি ফেরেশতারাও কি পরিমাণ সাওয়াব লিখবে তা লিখতে ভুলে যায়।
  • এছাড়া আল্লাহর কাছে নিজের গুনাহের কথা স্মরণ করে বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করুন।
  • দীর্ঘ সময়ের জন্য আপনি আল্লাহর কাছে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ করতে পারেন কেননা এ জিকিরের অর্থ হলো আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই।
  • দোয়া ইউনুস পাঠ করতে পারেন এবং সেইসঙ্গে আপনি লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বেশি বেশি করে পাঠ করতে পারেন।
  • শবে কদরের রাত্রে বা লাইলাতুল কদরের রাত্রে তাহাজ্জুদের নামাজ বিতরের নামাজের আগে আদায় করে নিতে পারেন।
  • আপনি যখনই দোয়া করবেন তখন এই দোয়া পড়ার ফাঁকে ফাঁকে বেশি বেশি দরুদ শরীফ এবং সূরা ইখলাস বেশি করে পাশ করবেন কেননা সূরা ইখলাসে আল্লাহ তালার পুরো আকার ইঙ্গিতের কথা বলা হয়েছে।

শবে কদরের রাতে করণীয় আমল-শবে কদরের রাতে করণীয় কী?

শবে কদরের রাতে করলে আমল করা সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি খুব সহজেই সেই রাত্রিতে ইবাদত মশগুল থাকতে পারবেন এরা যেহেতু একটা মহিমান্বিত ও মর্যাদাবান রাত সেহেতু এ রাতে কোন অংশেই আপনাদেরকে ঘাটতি রাখা যাবে না আপনি যদি হাজার মাস এর সমান একটি রাতকে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে সেই রাত্রিতে যদি আপনি এবাদত ছবি শুদ্ধভাবে না করেন তাহলে আপনার কোন লাভ হবে না আপনি এই রাত্রিতে যে আমলগুলো করবেন সে আমল গুলোর বিনিময়ে আপনি অধিক পরিমাণে সওয়াব লাভ করতে পারবেন। এ সকল করণীয় শবে কদরের আমলগুলো কিভাবে করা যায় চলুন আমরা এবার সেগুলো নিচে দেখে আসি

  • শবে কদরের রাতে আপনি বেশি করে নফল ইবাদত জিকির আজগার বেশি করে সাইয়েদুল ইস্তেগফার এবং তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে দোয়া করে এ রাতটি পার করতে পারেন।
  • বিশ্বজুড়ে এ রাত্রিটি হল লাইলাতুল কদরের রাত বা শবে কদরের একটি পবিত্র রাত্রি এ রাতে সকল মুসলমানগণ অত্যন্ত আনন্দ উদ্দীপনা সাথে এবং অতি মর্যাদার সাথে রাত্রি পালন করে থাকে।
  • সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব পবিত্র কোরআন মাজীদ এই রাতেই আল্লাহ তায়ালা লাওহে মাহফুজ থেকে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সালামের উপরে ৪০ বছর বয়সে নবুওয়াত লাভের মধ্যে তার ওপর নাযিল করা হয়।
  • আমাদের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসুল এবং সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে আমরা পেয়েছি মহিমান্বিত ঐশী গ্রন্থী আল কোরআন।
  • জিব্রাইল ফেরেশতার মাধ্যমে আমাদের প্রিয় নবীর কাছে এই কোরআন মাজীদ বা আল কুরআন বহন করে তার ওপর নাজিল করা হয় এবং আমরা এতটাই সৌভাগ্যবান ব্যক্তি যে আমরা আমাদের প্রিয় নবীর মাধ্যমে এ নাযিলকৃত ঐশী গ্রন্থী ও মহিমান্বিত আল কোরআন পেয়েছি।
  • পবিত্র কোরআন মাজিদ নাযিলের সম্মানার্থে যাজিরাতুল আরব হিসেবে আরবের ভূমিকে সম্মানিত ও মহিমান্বিত উঁচু মজাদার স্থানে বসানো হয়েছে।
  • কোরআনের ছোঁয়ায় আরবের ভূমি পবিত্র মক্কা নগরী কোরআনের নূরের তাজাল্লিতে ছায়া আবৃত হয়েছে।

শবে কদরের রাতে আমল করলে কি হয়

শবে কদরের রাতের ফজিলত ও গুরুত্ব অনেক বেশি এই ফজিলত পণ্য রাগ পাওয়ার আশায় যখন আপনি আল্লাহর কাছে সারা নিশি রাত ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকবেন এবং আল্লাহর প্রতি আমল করবেন তখন আল্লাহর পক্ষ হতে আপনার জন্য রহমত ও বরকত বয়ে আনবে কারণ এই রাত হল এতটাই পবিত্র রাত যে এই রাতে আপনি যে আমল করবেন সে আমলগুলো আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যাবে। 

এই রাতে পবিত্র কোরআন বা মহিমান্বিত বেশি গ্রন্থী আল কোরআন নাজিল হয়েছে শবে কদরের গুরুত্ব ও মর্যাদা অনেক বেশি। এই রাতে ফেরেস্তাগণ এবং রুহসকল আল্লাহর অনুমতি নিয়ে পৃথিবীতে শান্তির বার্তা নিয়ে আসেন এই শান্তির বার্তা ফজর পর্যন্ত একই ধারায় পর্যায়ক্রমে চলতে থাকে। 

আমরা প্রতিটি বছর রমজান মাসের শেষ দশক রাত্রির পাঁচটি বিজোড় রাত রয়েছে তা হল ২১,২৩,২৫,২৭ এবং ২৯ এই পাঁচটি রাত আল্লাহ তায়ালা আমাদের শবে কদরের রাত নির্ধারণ করে দিয়েছেন আমাদের প্রিয় নবীর উপর কোরআন মাজিদ নাযিল করেছেন এই রাতকে শবে কদরের রাত হিসেবে বা লাইলাতুল কদরের রাত হিসেবে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। 

পবিত্র মক্কা নগরীর হেরা গুহায় আমাদের প্রিয় নবীর ওপর আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার নিযুক্ত ফেরেশতাদের সরদার জিব্রাইল আলাই সালাম এর মাধ্যমে মহিমান্বিত ঐশী গ্রন্থী বা মহাগ্রন্থ আল কুরআন তার উপর অবতীর্ণ করেছেন যার ফলে এ রাতে মর্যাদা আরও অনেক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

শবে কদরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল

শবে কদরের রাতে বা লাইলাতুল কদরের রাত্রে গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল রয়েছে যে আমলগুলি করার মাধ্যমে আপনি আল্লাহ তাআলার খুবই কাছের বা নিকটবর্তী অত্যন্ত প্রিয় ব্যক্তিত্ব হতে পারেন। আল্লাহ অতি দয়াশীল ও ক্ষমাশীল তিনি চাইলে তার যেকোনো বান্দাকে একজন পরিপূর্ণ ঈমানদার ব্যক্তিতে রূপান্তর করতে পারেন কিন্তু তা তিনি কোন উছিলায় করবেন তা বলা আমাদের জন্য বেশ কঠিন। 

তাই শবে কদরের রাতকে আল্লাহ তায়ালা আমাদের ইবাদতের মাধ্যমে তাকে রানীখুশি করানোর জন্য এবং গুনাহ মাফের জন্য একটি কার্যকরী রাত হিসেবে আপনি আপনার জীবনে কাজে লাগাতে পারেন। কিন্তু এ রাত হল একটি অসীম নিয়ামতপূর্ণ রাত এ রাতে মহান আল্লাহ তা'আলা তাঁর সকল বান্দার খুব নিকটবর্তী বা কাছের হয়ে যান।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে শবে কদরের এ রাত্রিতে ভাল লাইলাতুল কদরের এই রাত্রিতে আপনি যদি বেশি বেশি আল্লাহর কাছে তওবা করেন বা ইস্তেগফার পাঠ করেন এবং আল্লাহর কাছে আপনি আপনার জীবন ও জিন্দেগীর গুনাহ মাফ চাইতে পারেন। বেশি করে আপনি দরুদ শরীফ এবং ইস্তেগফার পাঠ করতে পারেন এই রাত্রে তাছাড়া আপনি বেশি বেশি তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করার পাশাপাশি আপনি আল্লাহর কাছে দু হাত তুলে দোয়া করতে পারেন। 

আল্লাহ তার বান্দাকে অনেক বেশি ভালোবাসেন তাই তিনি এই রাত্রে আপনি আপনার রবের নিকট যেভাবে ইবাদত করেন না কেন যদি একটি নাত আপনার ভাগ্যে মিলে যায় তাহলে হয়তোবা তিনি এই একটি রাতের পরিবর্তে আপনার প্রতি খুশি হয়ে আপনাকে জান্নাত দান করতে পারেন। তাই আপনাকে আল্লাহর একজন প্রিয় বান্দা হতে হলে এ রাত্রির প্রতি বেশি বেশি আমল করতে হবে।

শবে কদরের রাতে যে সকল আমল করবেন

আপনারা যারা শবে কদরের রাতে যে সকল আমল করবেন তার সঠিক নিয়মগুলি যদি না জানেন তাহলে আপনি সেই রাত্রিতে আমল গুলি করতে পারবেন না যখন আপনার সে আমল গুলির প্রতি সুস্পষ্ট একটি ধারণা থাকবে তখন আপনি খুব সহজেই সেই রাত্রিতে আপনি ইবাদত বন্দেগী করে সেই রাত্রিটি কে কাজে লাগাতে পারবেন। যদি আপনার কোরআন শিক্ষা অর্জন করা থাকে তাহলে আপনি সেই রাতটি দীর্ঘ সময় ধরে কোরআন তেলাওয়াত করতে পারেন। 

এবং কোরআন তেলাওয়াত হলো আল্লাহর অত্যন্ত নেয়ামত পূর্ণ একটি ইবাদত। কারণ এই পবিত্র শবে কদরের রাতেই মহান আল্লাহ তায়ালা লাওহে মাহফুজ থেকে আমাদের প্রিয়নবীর উপর কোরআন মাজীদ নাযিল করেছেন। কুরআন পড়ার পাশাপাশি আপনি দরুদ শরীফ এবং সূরা ইখলাস ও ইস্তেগফার বেশি বেশি করে পাঠ করতে পারেন। সারারাত আপনি ইবাদতের মধ্য দিয়ে আপনার নিজের জীবন ও জিন্দেগীর যত গুনাহ করেছেন সে গুণাবলীর জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে দুই হাত তুলে মাফ চেয়ে কান্নাকাটি করতে পারেন। 

এমনকি আপনার নিজের মৃত আত্মীয়স্বজনের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন সেই সাথে আপনি বারবার আল্লাহর কাছে আপনি মাফ চাওয়ার দোয়া টি বলতে পারেন (রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বাইয়ানিস সাগিরা)। মহান আল্লাহ তাআলা তার কোন বান্দা কি কখনো খালি হাতে ফেরান না। শবে কদরের রাতে সম্পর্কে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেছেন। ভালো কাজের জন্য আমলকারীকে ঈমানদার আমল কারীর সমপরিমাণ সওয়াব দেওয়া হবে এবং তার আমলের সওয়াবের  ক্ষেত্রে কোন রকম ত্রুটিপূর্ণতা বা ঘাটতি করা হবে না

শবে কদরের বেশি সওয়াব হবে যেসব আমল করলে

শবে কদরের রাতে বা লাইলাতুল কদরের রাতে বেশি সওয়াব লাভের আশায় আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ আল্লাহর জন্য সারারাত তারা ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল হয়ে সময় কাটাতে থাকে আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতের দরজা চিরদিনের জন্য খুলে দেন। এ রাতে যদি একজন বান্দা তার প্রভুর নিকট হাত তুলে মোনাজাতে কান্নাকাটি করে এবং তার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে যে হে আমার রব আমি ভুল করেছি আমাকে মাফ করে দাও। 

এ কথা বলে তাহলে মহান আল্লাহ তা'আলা তাকে ক্ষমা করে দিয়ে তারপর তার রহমত নাজিল করেন। বেশি করে সোয়াব পাওয়ার আশায় আপনি শবে কদরের রাতে প্রথমে যদি পারেন তাহলে গোসল করে নিয়ে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন পোশাক পড়ে আল্লাহর দরবারে তার ইবাদত বন্দেগীতে কাটানোর জন্য হাজির হবেন।

আরো পড়ুনঃ

সে সঙ্গে ফরজ নামাজের পর থেকে নফল নামাজ আদায় করতে পারেন। নফল নামাজের মাঝে মাঝে আপনি কোরআন তেলাওয়াত, উপরে আমরা যে সমস্ত জিকির গুলো দিয়েছি সে সমস্ত জিকির যদি আপনি আরো কিছু জেনে থাকেন সেগুলো, এবং দোয়া, ইস্তেগফার, সূরা ইখলাস, দুরুদ শরীফ এবং সাইয়েদুল ইস্তেগফার ও তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতে পারেন। 

ফজরের নামাজের পূর্ব পর্যন্ত আপনি ইবাদত বন্দেগী করে আল্লাহর কাছে মোনাজাতে কান্নাকাটি করে তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন। সারারাত কদরের রাতে যে সকল আমল আপনি করবেন তার ফলে আল্লাহতায়ালা যদি আপনার প্রতি সন্তুষ্টি হন তাহলে আপনাকে বেশি বেশি সওয়াব দান করতে পারেন।

লাইলাতুল কদর সম্পর্কে প্রচলিত কিছু প্রশ্ন

প্রশ্নঃ লাইলাতুল কদর সম্পর্কে মহানবী কি বলেছেন?

উত্তরঃ লাইলাতুল কদর সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবীজি বলেছেন এ রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম তাই তোমরা রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের যে বিজোড় পাঁচটি রাত আছে সেই বিজোড় পাঁচটি রাত তোমরা তালাশ করতে থাকো যেন তোমরা লাইলাতুল কদরের খোঁজ পাও।

প্রশ্নঃ লাইলাতুল কদরের রাতে কি হয়

উত্তরঃ লাইলাতুল কদরের রাতে আল্লাহ তাআলা তার সকল বান্দার প্রতি তাঁর রহমত প্রসারিত করতে থাকেন এবং তার বান্দাকে তিনি আন্তরিকতার সাথে ক্ষমা করেন লাইলাতুল কদরের রাত হল আমাদের পাপ মোচনের জন্য একটি বিশেষ সুযোগ আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা পাওয়ার জন্য ফিরে আসা এবং আমাদের আচরণকে আর উন্নত করার জন্য এবং পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য একটি চূড়ান্ত সময়।

প্রশ্নঃ কদরের রাতে কোন সূরার কত আয়াত নাজিল হয়

উত্তরঃ কদরের রাতে সূরা আল কদর নাযিল হয় যা কোরআনের সিরিয়াল অনুযায়ী ৯৭  তম সূরা আয়াত সংখ্যা ৫ টি এবং রুকুর সংখ্যা ১ টি এই সূরা আল কদর সূরাটি অবতীর্ণ হয় মক্কায় কদরের অর্থ হলো অধিক মর্যাদা আর এই মর্যাদার জন্য এই রাত্রিকে লাইলাতুল কদরের রাত বা মহিমান্বিত রজনী বলা হয়।

প্রশ্নঃ রমজানের শেষ দশ দিন কে কি বলা হয়

উত্তরঃ রমজান মাসের শেষ দশ দিন কে বলা হয় নাজাত বা মুক্তি। এই শেষ ১০ দিনের মধ্যে বিজোড় যে পাঁচটি রাত রয়েছে এই বিজয়ের পাঁচটি রাতের মধ্যে একটি রাত হল লাইলাতুল কদরের রাত এ রাত যদি কোন এক ব্যক্তির ভাগ্যে লেগে যায় তাহলে তার পূর্ব সমস্ত গুনাহ আল্লাহ তায়ালা মাফ করে দিতে পারেন। তাই রাতকে বলা হয়েছে গুনাহ থেকে পরিত্রাণ পেয়ে মুক্তি লাভের জন্য একটি অপরিহার্য সময় তাই এই দশ দিনকে বলা হয় নাজাত বা মুক্তি।

প্রশ্নঃ লাইলাতুল কদরের তারিখ জানা নেই কেন?

উত্তরঃ বিভিন্ন হাদিস বিশারদ এর অনুসারে এই সঠিক তারিখটি অনিশ্চিত রয়েছে তবে এটি ইসলামিক ক্যালেন্ডার এর নবম মাস তথা রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের বিজোড় সংখ্যা যুক্ত রাত গুলির যেকোনো একটি সেই সময় থেকে আমাদের মুসলমানরা রমজানের শেষ 10 রাতকে বিশেষভাবে বরকতময় রাত বলে পালন করে থাকে।

প্রশ্নঃ শবে কদরের নামাজ কত রাকাত

উত্তরঃ লাইলাতুল কদরের রাতে যেহেতু দুই রাকাত করে নফল নামাজ সুন্দর ও মনোযোগ সহকারে পড়ায় উত্তম তাই আপনি দুই রাকাত দুই রাকাত করে আপনি যত খুশি তত নামাজ আদায় করতে পারেন। এটা আপনি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য বেশি বেশি এই রাত্রিতে কোরআন তেলাওয়াত করবেন এবং দোয়া পড়বেন সাথে ইস্তেগফার পড়বেন ও আল্লাহর কাছে তওবা করবেন।

প্রশ্নঃ শবে কদরের রাতে কোন দোয়া পড়তে হয়?

উত্তরঃ আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা'ফু আন্নি।
অর্থঃ হে আল্লাহ আপনি মহানুভব ক্ষমাশীল এবং আপনি ক্ষমা করতে পছন্দ করেন অতএব আপনার এই গুনাহগার বান্দাকে আপনি ক্ষমা করুন।

মন্তব্যঃ শবে কদরের গুরুত্ব ও ফজিলত-শবে কদরের রাতে করণীয়

বন্ধুরা সবই কদরের রাত্রে বেলায় লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক আপনার অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে শবে কদরের রাতে কি কি আমল করব, লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস কি, শবে কদরের গুরুত্ব ফজিলত, শবে কদরের রাতে কোন সূরা পড়তে হয়, শবে কদরের রাতের ইবাদত, শবে কদরের ইস্তেগফার কি, শবে কদরের আমল কোনগুলো, শবে কদরের যে সব আমল করা যায়, শবে কদরের আমল যে নিয়মে করবেন, শবে কদরের রাতে করণীয় আমল ও শবে কদরের রাতে করনীয় কি, শবে কদরের রাতে আমল করলে কি হয়, শবে কদরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল ইত্যাদি নিয়ে আমরা আপনাদের সাথে উপস্থিত হয়েছি। যদি আমাদের উক্ত আর্টিকেলটা আপনাদের পছন্দ হয়ে থাকে তাহলে আপনাদের বন্ধু বান্ধবের মাঝে শেয়ার করতে পারেন, এবং এমন আরো নিত্য নতুন আর্টিকেল পাবলিশ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই থাকুন সাথে থাকুন ধন্যবাদ। ২০২

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url