ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহারগুলো জানলে অবাক হবে

আজকে আমরা এই আর্টিকালটি তে ওষুধের দোকানে বা ফার্মেসিতে যে ভিটামিন ই ক্যাপসুল পাওয়া যায়।। এই ভিটামিন ই ক্যাপসুল মূলত রূপচর্চায় বর্তমানে ব্যাপক ভাবে  ব্যবহৃত হচ্ছে । আজকে আমরা রূপচর্চায় ব্যবহৃত ভিটামিন ই এর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব এবং কিভাবে তা ব্যবহার করা হয় সে সম্পর্কে সাময়িক কিছু ধারণা দিব।

প্রেসক্রিপশন ছাড়া ভিটামিন ই ঃ

প্রেসক্রিপশন ছাড়া ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার অভ্যাস খুব অল্প সময়ে প্রেশারের জটিলতা, অতিরিক্ত ওজন, হরমোনাল ইম্ব্যালান্স সহ আরও অনেক জটিল সমস্যা তৈরি করে। তাই মনে করবেন না এখন চুল পড়ার সমস্যায় ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেয়ে ডাক্তারের অনেকগুলো খরচ বাঁচিয়ে ফেললেন, নিজের কাছের মানুষের জীবনে ঘটে যাওয়া করুণ এক্সপেরিএন্স থেকে বলছি, এমন কাজ করলে পস্তাতে আপনাকে হবেই।

আরো পড়ুনঃ  কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়

ভিটামিন ই ক্যাপসুল যেভাবে চিনবেনঃ

(১) আমি কোন কসমেটিক শপে পাওয়া চাইনিজ স্কিন বা হেয়ার ক্যাপসুলের কথা বলছি না। আমি ফার্মেসিতে যে ভিটামিন ই পাওয়া যায় সেই ক্যাপসুলের কথা বলছি, যেগুলো খাওয়া হয়।

(২) ২০০ মিলিগ্রাম গুলো গাড়ো  সবুজ রঙের আর ৪০০ মিলিগ্রাম গুলো গাড়ো  কমলা রঙ্গের হয়। কমলাটার দরকার নেই। নিচে যে কাজগুলো করতে বলব তা যদি কেউ ট্রাই করতে চান সবুজটাই যথেষ্ট।

(৩) আর্টিকেল  পড়ার পর আপনাদের মনে যে প্রশ্ন আসতে পারে ....... 

খাওয়ার ঔষধ কি মুখে দেয়া যায়? কোন সাইড ইফেক্ট আছে কি না? ’ তাদের জানিয়ে দিচ্ছি যে, খাওয়ার ভিটামিন ই  ক্যাপসুল মুখে, চুলে, হাতে,পায়ে সবখানে মাখা যায়। কারণ এগুলো নির্ভেজাল। সাইড ইফেক্ট হবার তেমন কোনো সম্ভবনা নেই বললেই চলে।

বিভিন্ন রূপচর্চায় ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহার ঃ 

প্রতিটা টিপসের জন্যই ক্যাপসুল ফুটো করে ফেললে যে তেলটা পাওয়া যায় সেটা আমরা ব্যবহার করব। যেহেতু একটা ক্যাপসুল ফুটো করলে প্রায় আধা চা চামচ তেল পাওয়া যায় আর ভিটামিন ই তেল খুবই ভারী হয় সুতরাং আপনারা একটা ক্যাপসুলের তেল দিয়ে নিজের ত্বকের ধরন বুঝে যেখানে যতটুকু লাগে ব্যবহার করবেন। ড্রাই, আর নরমাল স্কিনের কিন্তু পোয়া বার! আপনাদের জন্য এই ভারী ভিটামিন ই তেল কম খরচেই লাক্সারিয়াস বিউটি ট্রিটমেন্টের রেজাল্ট দেবে

আরো পড়ুনঃগর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় টেস্ট  

 স্কিন সিরাম হিসাবে ভিটামিন ইঃ

বাজারে দি বডি শপ এর একটা ভিটামিন ই ফেসিয়াল সিরাম আছে। বাজি রেখে বলতে পারি আপনি যদি ভিটামিন ই ক্যাপসুল আপনার ত্বকে ব্যবহার করেন তাহলে মার্কেটের বডি শপের সিরামের মতই রেজাল্ট পাবেন। যাদের স্ক্রীন ড্রাই আর নরমাল তারা যদি ভিটামিন ই তেল ত্বকে ফোঁটা ফোঁটা লাগিয়ে হালকা করে ম্যাসাজ করেন তাহলে অনেক উপকার পাবেন। আর যাদের ত্বক তৈলাক্ত  আপনাদের জন্য তেলটা খুবই ভারী হবে। 

মাত্র এক ফোঁটা তেল প্রথমে দুই হাতে নিয়ে ঘষুন, এরপর হাত দুটো  মুখে ৫ সেকেন্ড চেপে ধরুন। হয়ে গেল আপনার সিরাম লাগানো। এভাবে ভিটামিন ই ব্যবহার করলে আপনার আর অন্য কোন নাইট ক্রিম বা সিরাম ব্যবহারের দরকার পড়বে না। আর এই টিপসে সবচেয়ে বেশি উপকার পাবেন একটু বয়স্করা। কারণ আপনাদের ত্বকের ফাইন লাইন দূর করতে ভিটামিন ই খুবই ভালো হবে।

হাটু ও কনুর কালো দাগ দূর করতে ভিটামিনঃ 

দীর্ঘদিনের পুরনো স্কিনের দাগ দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর কোন তুলনা নেই। আপনার হাঁটুতে বা কনুই  যদি এমন দাগ থাকে তবে প্রতিদিন ১ টা ক্যাপসুলের তেল মুখে ব্যবহার করার পর অতিরিক্ত যে তেলটুকু বাকি থাকে তা কনুই আর হাঁটুতে লাগান। ২-৩ সপ্তাহের ব্যবহারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখতে পাবেন!

নাইট ক্রিম হিসেবে জাদুকরি কাজ করে  ভিটামিন ইঃ

জানি ১ম টিপস টা ট্রাই করতে অনেকেই ভয় পাবেন। কারণ ফেসিয়াল অয়েল জিনিসটা এখনও এদেশে তেমন জনপ্রিয় না। তাদের জন্য এই টিপস। আপনার পছন্দের নাইট ক্রিম বা হালকা বেবি ক্রিম নিন। এবার এই কৌটায় ১-২ টি ক্যাপসুলের তেল ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার এই ক্রিম রেগুলার ব্যবহারে আপনি এক্সট্রা ভিটামিন ইর গুণটা পাবেন। একই ভাবে আপনার প্রিয় বডি লোশনেও ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ  পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম বা ডিম্বাশয়ে একাধিক ছোট ছোট সিস্ট হলে মেয়েরা কী করবেন?

চুলের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ঃ

চুল পড়ে যাওয়া বন্ধ করতে আর রিবনডেড বা কালারড চুলের যত্নে ভিটামিন ই খুবই ভালো হবে। বেশি উপকার পেতে ২-৩ টি ক্যাপসুল ভেঙ্গে ভারী তেলটা একটা পাত্রে নিয়ে স্ক্যাল্প আর চুলে লাগিয়ে নিন। সারারাত রেখে পরদিন ধুয়ে ফেলুন। যদি আপনার মনে হয় এই ট্রিটমেন্টটা আপনার জন্য বেশি ভারী হয়ে যাচ্ছে, শ্যাম্পু করলে যাচ্ছে না তবে এক টেবিল চামচ নারকেল তেলের সাথে ১ টা ক্যাপসুল ভেঙ্গে ব্যবহার করুন। খুব সহজে শ্যাম্পু করতে পারবেন।

চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতেঃ

অনেকেই আছেন যারা চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে খাটি বাদাম তেল ব্যবহার করেন। তার সাথে যদি ভিটামিন ই তেল মিশিয়ে নেন তবে খুবই কম সময়ে ভালো ফল পাবেন। সাজগোজে এর আগে ভিটামিন ই তেল দিয়ে অ্যান্টি ডার্ক সার্কেল সিরাম রেসিপি দিয়েছিলাম। সেটাও ফলো করতে পারেন।

মসৃণ, গোলাপি ঠোঁট পেতে বা ঠোঁটে যত্ন নিতেঃ

মুখে, হাতে পায়ে লাগিয়ে যেটুকু তেল থাকবে সেই তেলের ফোঁটাটা ঠোঁটে ভালো ভাবে লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন। কালো , ফাটা ঠোঁটের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন। আপনার পছন্দের লিপবাম বা ভ্যাস্লিনের সাথে ক্যাপসুল ভেঙ্গে মিশিয়ে সেটাও রেগুলার ব্যবহার করতে পারেন।

 ব্রনের দাগ দূর করতেঃ 

আপনার ত্বকে যদি অনেক পুরনো কাটা দাগ, ব্রনের দাগ বা পক্সের দাগ থাকে তবে রেগুলার সেই দাগে এক-দুই ফোঁটা করে ভিটামিন ই তেল লাগিয়ে রাখুন। ধীরে ধীরে একটু হলেও দাগটা হালকা হবে। এধরনের দাগ হালকা করতে ভিটামিন ই তেল খুবই কার্যকরী।

এগুলো স্কিন আর হেয়ার কেয়ারে তথা রূপচর্চায় ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের কিছু ফুলপ্রুফ ওয়ে । এতে করে কিছু না বুঝে শুনে ক্যাপসুল না খেয়ে ভিটামিন ই এর উপকার আপনি পাবেন। আর যদি খেতেই চান তবে ক্যাপসুল না খেয়ে ভালো সুষম খাবারের মাধ্যমে ভিটামিন ই শরীরে দেয়ার চেষ্টা করুণ। শাক সবজি, বাদাম, ডিম ইত্যাদি বেশি করে খান। ত্বক আর চুল তো ভালো থাকবেই আর কোন এক্সট্রা ঝুঁকিও নিতে হবে না।

ত্বকের রোদে পোড়া দাগ দূর করে

দীর্ঘ সময় ধরে রোদে থাকার ফলে ত্বকে পোড়া দাগ দেখা যায় এবং ত্বকে প্রদায় হতে পারে। এই সমস্যা দূর করার জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল বাবারের করা যেতে পারে।

ব্যবহারের নিয়ম: ২ থেকে ৩ টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙে ভেতরে থাকা তরল বের করে একটি ছোট পাত্রে রাখুন। অভ্যপর সামান্য পরিমাণ দই এবং লেবুর রস ভিটামিন ই তরলের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি রোদে পোড়া ত্বকে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। শুকিয়ে যাওয়ার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ঘুয়ে ফেলুন। এটি আপনার রোদে পোড়া ত্বককে আরাম দেবে।২০৩

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url