থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করা কি জায়েজ-থার্টি ফার্স্ট নাইট সম্পর্কে ইসলাম কি বলে

 বন্ধুরা আসছে নতুন বছর থার্টি ফার্স্ট নাইট এই নতুন বছরে বা থার্টি ফার্স্টে  আপনার অনেকেই আনন্দে মেতে উঠবেন। এবং আনন্দের সাথে নতুন বছরকে বা ইংরেজি নববর্ষকে থার্টি ফার্স্ট এর আনন্দ উদ্দীপনার মাধ্যমে বরণ করে নিবেন। আজকে আমরা আলোচনা করতে চলেছি থার্টি ফার্স্ট নাইট কি, থার্টি ফার্স্ট নাইট অর্থ কি, থার্টিফার্স্ট নাইট উইকিপিডিয়া এবং থার্টিফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস থার্টিফার্স্ট নাইট কি ইসলামে বৈধ, থার্টি ফার্স্ট নাইট সম্পর্কে ইসলাম কি বলে।

থার্টি ফার্স্ট নাইট

সূচিপ্ত্রটি দেখে নিন

আর মাত্র কয়েকদিন বাকি ফার্স্ট নাইট এর বা ইংরেজি নববর্ষের। যেহেতু থার্টি ফার্স্ট নাইট বা ৩১ ডিসেম্বর বছরের শেষ দিন সেহেতু এই দিনটি এলেই আমরা আনন্দ উৎসবের কথা সকলে শুনতে পাই কিন্তু আমরা থার্টি ফার্স্ট নাইটের ইতিহাস সম্পর্কে জানি না। চলুন তাহলে আমরা এবার থার্টি ফাস্ট নাইট সম্পর্কে ইসলাম কি বলে জানা যায় দেশ ও বিদেশ সহ বিশ্বের প্রায় সকল দেশে এই থার্টি ফার্স্ট নাইট  বা ৩১ ডিসেম্বর পালিত হয় কিন্তু ৩১ ডিসেম্বর উদযাপন করার ইতিহাসগুলো আমরা জানি না। তাহলে আমরা এবার থার্টি ফার্স্ট নাইটের ইতিহাস সম্পর্কে জেনে আসি চলুন।

থার্টি ফার্স্ট নাইট ভূমিকাঃ

থার্টি ফার্স্ট নাইট হল ইংরেজি বছরের শেষ দিন এবং ইংরেজি নববর্ষের শুরু তাই থার্টিফার্স্টের মাধ্যমে পুরনো বছরকে বিদায় দিয়ে ইংরেজি নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে থাকে সকলে কিন্তু এই থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন করা সম্পর্কে অনেকে অনেক কথাই বলে থাকেন কিন্তু আসলে আমরা কিন্তু জানিনা যে থার্টি ফার্স্ট নাইট ইসলামে বৈধ কিনা। 

থার্টি ফার্স্ট নাইট ইসলাম কি জায়েজ না নাজায়েজ খ্রিস্ট ধর্মীয় উৎসবটিকে কিন্তু আমরা অনেকেই ধর্মীয় উৎসব হিসেবে বা নববর্ষের সূচনা হিসেবে পালন করে থাকি কিন্তু আসলেই কে আমাদের জন্য মুসলমানদের জন্য এই খ্রিস্টীয় কালচার পালন করা উচিত তাহলে আমরা এবার থার্টিফার্স্ট নাইট কি থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন কি ইসলামী বৈধ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে সম্পূর্ণ জানতে পুরোন আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় আসা যাক।

থার্টি ফার্স্ট নাইট কি

থার্টি ফার্স্ট নাইট হল খ্রিস্টীয় বাবরিয়ন ক্যালেন্ডার হিসেবে ৩১ ডিসেম্বর দিবাগত রাত এই রাতকে পালন করে থাকে অর্থাৎ ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা জানুয়ারির প্রথম প্রহরে ৩১ ডিসেম্বর রাত বারোটার সময় সারা বিশ্বে উৎসবমুখর আনন্দ উদ্দীপনা মুখর একটি পরিবেশের সৃষ্টি হয় ইংরেজি নববর্ষ কে বরণ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান আনন্দ উৎসবমুখর পরিবেশ আতশবাজি এবং বিভিন্ন ধরনের নৃত্য পরিবেশন করা হয়। 

আরো পড়ুনঃ জুমার নামাজের বিধান কি?জুমার নামাজের হুকুম কি?

কিন্তু বিশ্বের কিছু মুসলমান রাষ্ট্রে এই দিনটি পালিত হয় না যেমন যে সকল দেশগুলোতে পালিত হয় না সে সকল দেশগুলো হলো সৌদি আরব নেপাল আফগানিস্তান কাতার কুয়েত ইত্যাদি খ্রিস্টীয় ক্যালেন্ডার বলা হয় নিউ ইয়ার ইভ মূলত এই দিনটিকে ইংলিশ নববর্ষ বা ইংরেজি নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর জন্য বরণ করে নেয়ার জন্য পালন করা হয়। ১৭৫২ সাল থেকে ইংরেজি নববর্ষের পরিচালনা শুরু হয় কিন্তু বিশ্বের কিছু মুসলমান রাষ্ট্রে এ দিনটি উদযাপিত হয় না। তাহলে আমরা নিচে বা থার্টি ফার্স্ট নাইট সম্পর্কে ইসলাম কি বলে আরও বিস্তারিত জানব।

থার্টি ফার্স্ট নাইট অর্থ কি

থার্টি ফাস্ট নাইট এটা হল একটি ইংরেজি শব্দ যার অর্থ হলো। 30 শব্দের অর্থ ৩০ ফাস্ট শব্দের অর্থ প্রথম এবং নাইট শব্দের অর্থ রাত্রি বা রাত অর্থাৎ থার্টিফার্স্ট নাইট এ শব্দটিকে একত্র করলে আমরা যে অনুবাদটি পায় সেটি হল 31 এর রাত অর্থাৎ ইংরেজি নতুন বছর বা নববর্ষ কে বরণ করার জন্য এই দিনটি পালিত হয়। 

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই দিনটিকে উৎসব মুখরিত আনন্দিত করার জন্য পাবলিক হলিডে পালন করা হয় বিভিন্ন ধরনের উৎসব ও আনন্দ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এই দিনটিকে সকলে পালন করে থাকে কিন্তু খ্রিস্টীয় ক্যালেন্ডার অনুসারে এই দিনটি পালিত হয় এই রাত পোহানোর পরেই নতুন বছরের সূচনা শুরু হয় বা নতুন বছরের জন্য সূর্যের আবির্ভাব ঘটে তাই নতুন বছর বা ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিনটি পুরনো দিনগুলোর শরণার্থী এবং নব দিনগুলোর স্বাগত জানাতে পালন করা হয়।

থার্টি ফার্স্ট নাইট কে কি বলা হয়

থার্টি ফার্স্ট নাইট কে শুধু থার্টি ফাস্ট নাইট এ নয় বরং এটাকে নিউ ইয়ার ইভ ও বলা হয়। যেহেতু পুরনো বছরের শেষ এবং নতুন বছরের শুরু তাই থার্টি ফার্স্ট নাইটকে নিউ ইয়ার ইভ বলা হয়।

থার্টি ফার্স্ট নাইট সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

থার্টি ফার্স্ট নাইট হল ইংরেজি বর্ষের শেষ দিন এটি খ্রিস্টীয় গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পালন করা হয়। এই রাত্রি সম্পর্কে আমাদের ইসলাম ধর্মে যা বলা হয়েছে তা হল এ রাতটি যেহেতু খ্রিস্টীয় ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পালন করা হয় সেহেতু এটি ইসলামে বৈধ নয় বরং অবৈধ কেননা খ্রিস্টানরা কখনো মুসলমান সম্প্রদায়ের ভালো দিক লক্ষ্য করেনা বরং তারা মুসলমানদের জন্য ঘোর শত্রু তাই তারা মুসলমানদের কিভাবে নির্মুল ও নিঃশেষ করা যায় তার ঘোর পরিকল্পনা করে থাকে। 

আরো পড়ুনঃ জুমার দিনের ১৩ টি গুরুত্বপূর্ণ আমল

তাই তারা এই ঘোর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার জন্য মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে এই খ্রিস্টীয় লিপি বা বছরের শেষ দিন থার্টি ফার্স্ট নাইট এর সূচনা শুরু করে। এই থার্টি ফার্স্ট নাইট রাত্রিটিকে কেন্দ্র করে প্রায় অনেক যুবক-যুবতী অবৈধ অশ্লীলতা এবং বেহায়াপনা তাছাড়া এই রাতে অনেক নারী পুরুষ যিনা নামক খারাপ কাজে লিপ্ত হয়ে থাকে। 

আমাদের ইসলামের নবী "হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে সকল ব্যক্তি কাপড় পরিহিত নগ্ন অবস্থায় থাকে বা বিভিন্ন রকম পরপুরুষকে নিজেদের দিকে আকৃষ্ট করে থাকে এবং তারা নিজেরাও খারাপ কাজের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে সে সকল নারী বা পুরুষ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না"। নাই মুসলমান সম্প্রদায়ের উচিত এ থার্টি ফাস্ট নাইট অশ্লীলতা বেহায়াপনার এ রাত্রিটিকে বর্জন করা বা পালন না করা।

থার্টি ফার্স্ট নাইটের ইতিহাস

থার্টি ফাস্ট নাইটের ইতিহাস অনেক বড় হাত ধরে সর্বপ্রথম খ্রিস্টপূর্ব ৪৬ সালে ইংরেজি নববর্ষ এর সূচনা বা উদযাপিত হয় জুলিয়াস সিজনের পড়ে ১৫ সম্রাট জামশেদ এই খ্রিস্টপূর্ব 800 সালে এই নববর্ষের প্রচলন শুরু করেন এই ধারাবাহিকতা এখনো নববর্ষের ঐতিহ্যগত জাতীয় উৎসব হিসেবে পালন করা হয় তার পরবর্তীতে পারস্য হতে ক্রমান্বয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশ এবং ভারত সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই উৎসবটি বিস্তার লাভ করে। 

বিভিন্ন দেশে তাদের নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম অনুযায়ী এ উৎসবটি পালন করা হয়ে থাকে। তবে ব্যাবিলনে নববর্ষ শুরু হতো মহাবিশুবের ২০ মার্চের দিন আবার গ্রীকদের নববর্ষ পালিত হতো খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীর ২১ ডিসেম্বর এর দিন। এভাবে বিভিন্ন রীতিনীতি অনুযায়ী এই ইংরেজি নববর্ষ পালন করা হতো তবে আমরা বর্তমান সময়ে থার্টি ফার্স্ট নাইটের ইতিহাস থেকে যা পায় তা হল পূর্বের নিয়ম গুলির পরবর্তীতে খ্রিস্টীয় রীতি অনুযায়ী গোটা বিশ্বে এই খ্রিস্টীয় গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডার বা ইংরেজি বর্ষের সূচনা শুরু হয় যা থার্টি ফার্স্ট নাইট পালিত হয় ৩১ ডিসেম্বরের দিন। 

শুধুমাত্র মুসলিম রাষ্ট্রগুলো ব্যতীত তবে ইংরেজি সাল গণনা হয় ইংরেজদের আবিষ্কারের মাধ্যমে নয় এটি একটি গ্রেগোরিয়ান বা খ্রিস্টানদের আবিষ্কার তাই আমরা সাধারণভাবে এটিকে ইংরেজি নববর্ষ নয় বরং আমরা এটিকে গ্রেগোরিয়ান নববর্ষ বলতে পারি যেহেতু 1752 সালে একলা জানুয়ারিকে বা নববর্ষের প্রথম দিনকে ইংরেজি নববর্ষ হিসেবে পালন করে থাকে তাহলে আমরা থার্টিফার্স্ট নাইটের ইতিহাস থেকে যা বুঝতে পারি তা হল এটি গ্রেগোরিয়ান নববর্ষ।

থার্টি ফার্স্ট নাইট উইকিপিডিয়াঃ থার্টি ফার্স্ট নাইটের ইতিহাস

আমরা থার্টি ফার্স্ট নাইট উইকিপিডিয়া বলতে আমরা যে বিষয়টি আলোচনা করতে চলেছি তা হল থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু দিক বা বিষয় নিয়ে বিষয়গুলো আপনাকে বা পুরো মানবজাতিকে থার্টি ফাস্ট নাইট সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দিবে। গৃহঋণ ও বা খ্রিস্টীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে বছরের শেষ অংশ বা শেষ দিন যেটি আমরা ৩১ ডিসেম্বর বা থার্টিফার্স্ট নাইট পালন করে থাকে মানে থার্টিফার্স্ট নাইট ৩১ ডিসেম্বরের দিবাগত সন্ধ্যা কে বোঝানো হয়ে থাকে।

এই দিনটিতে গোটা বিশ্বের যত সকল মানুষ রয়েছে তারা তাদের বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন এবং পরিবারের সহিত সামাজিকভাবে এই অনুষ্ঠানটি উদযাপিত করে থাকে শুধু এই উদযাপিত অনুষ্ঠানটিকে আনন্দ মুখরিত করার জন্য আরও বেশ কিছু আনন্দ উপভোগ করে থাকে যার মধ্যে বিভিন্ন নৃত্য-সংগীত, খাওয়া-দাওয়া, আতশবাজি ইত্যাদির মাধ্যমে নববর্ষের মধ্যে উদযাপিত হয় এই অনুষ্ঠান যা চলমান থাকে নববর্ষের প্রথম দিন অর্থাৎ প্রথম জানুয়ারি ভোর পর্যন্ত। 

তবে এই দিনটিতে ইংরেজি ভাষা সংস্কৃত দেশগুলোতে স্মৃতি বিদুর মূলক গান গাওয়া হয়। যা বাংলাদেশে রবীন্দ্র সংগীত হিসেবে খুবই পরিচিত সেটা হল পুরনো সেই দিনের কথা। যা খ্রিস্টীয় দিবস হিসেবে এই দিনটি পালিত হলেও গণমাধ্যমের প্রচার-প্রচারণায় এটি বিশ্বের প্রায় অনেক দেশেই থার্টি ফার্স্ট নাইট পালিত হয়। যা বাংলাদেশেও বর্তমান যুবক যুবতীরা এ থার্টিফার্স্ট নাইট পালন করে থাকে।

থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন উপলক্ষে ইসলাম কি বলে?

ইসলাম শব্দের অর্থ হল শান্তি এই মহান ধর্মের মাধ্যমেই কেবল মৃত্যুর পরেও সুখ ও শান্তি পাওয়া সম্ভব ইসলাম হলো আল্লাহর মনোনীত ধর্ম যা সর্বদাই মানুষকে কল্যাণের পথে ডাকে এই পবিত্র ধর্ম সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ যা বলে থাকেন তা হলঃ"নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলার মনোনীত দ্বীন হচ্ছে ইসলাম" 

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে আরও বলেছেন"আজ আমি তোমাদের মাঝে আমার মনোনীত দিনকে সম্পুর্ণ করে দিলাম, তোমাদের উপর আমার রহমত এবং নিয়ামতকে আমি সম্পূর্ণভাবে পরিপূর্ণ করলাম এবং আমি তোমাদের এই দ্বীন ইসলাম ধর্মের প্রতি সন্তুষ্ট রইলাম"

আরো পড়ুনঃ যেসব আমলে আল্লাহ দ্রুত দোয়া কবুল করেন জেনে নিন

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন "যে ব্যক্তি কোনো বিধর্মী সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে সে তাদের দলভুক্ত হয়ে যাবে এবং কাল কেয়ামতের দিনে তার সাথেই তার রোজ হাশরের বিচারকার্য শুরু হবে।

ইসলামের শরীয়ত মোতাবেক থার্টি ফার্স্ট নাইট যেহেতু শুধু খ্রিস্টানরই নয় বরং মুসলমানরাও পালন করে থাকে তা এটি শুধু হারামি নয় বরং এটি এক পর্যায়ে শিরকের কাতারে পড়ে আর যে ব্যাক্তি শিরক করে সে মুশফিকদের দলভুক্ত হয়ে যায়। তাই ইসলাম ধর্মে কখনোই কোনরকম কুসংস্কৃতি এবং বিজাতীয় জাতি তত্ত্বের অথবা অপসংস্কৃতির কোন স্থান নেই বা কোন অনুমোদন নেই যেহেতু বাংলাদেশের ৯০% মানুষ এর ধর্ম ইসলাম তাই দেশে বিধর্মীদের কোন সংস্কৃতি উদযাপন করা উচিত নয়।

যদি কোন ব্যক্তি বিধর্মীদের এই সংস্কৃতিকে গ্রহণ করে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাদের মনে রাখতে হবে যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম একটি হাদিস বলেছিলেন সেটি হল যে ব্যক্তি যে জাতির সাথে সম্পর্ক রাখবে সে তাদের দলভুক্ত হয়ে যাবে এবং কেবল তাদের সাথে তার হাশর শুরু হবে। তাই সকল মুসলিম ভাইদেরকে সচেতন হতে হবে এবং এই থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন করা থেকে বিরত থাকতে হবে কোন ধরনের আতশবাজি গান বাজনা এমন কোন অপসংস্কৃতির শামিল হওয়া যাবে না।

থার্টি ফাস্ট নাইট পালন করা কি ইসলামে জায়েজ

বন্ধুরা এতক্ষণ আমরা থার্টি ফার্স্ট নাইট সম্পর্কে আলোচনা করলাম যে এখন আমরা যে বিষয়টা আলোচনা করতে চলেছি তা হল থার্টি ফার্স্ট নাইট। থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করা ইসলামে কিন্তু একদমই এটি নাজায়েজ এবং গর্হিত কাজ কারণ থার্টি ফার্স্ট নাইট শব্দের এ রাত্রিকে অনেক মানুষ বিভিন্ন খারাপ কাজের সাথে বা অশ্লীল কাজের সাথে লিপ্ত থাকে। 

যেহেতু বিভিন্ন খ্রিস্ট্রীয় কান্ট্রিতে দেখা যায় যে তারা এই থার্টি ফার্স্ট নাইটের রাত্রে মদ্যপান, ধূমপান, নিত্য, সঙ্গীত এবং বিভিন্ন আতশবাজি ও অসামাজিক অশ্লীলতার কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত থেকে তারা এই রাতটিকে উদযাপন করে থাকে যা আমাদের ইসলামে বৈধ নয় আল্লাহতায়ালা বলে থাকেন যে "সমাজের এমন কিছু নারীর আবির্ভাব ঘটবে যা দ্বারা বোঝা যাবে তারা কাপড় পরিহিত অবস্থায় নগ্ন অবস্থায় থাকবে।

আরো পড়ুনঃ দোয়া কবুল হওয়ার কারন-নামাযে ভুল হলে করণীয়

বর্তমান প্রেক্ষাপট অনুযায়ী সমাজে অনেক নারী রয়েছেন যারা এই রাত্রিকে আনন্দ উদযাপন করার জন্য বিভিন্ন রকম ছোটখাটো পোশাক পড়ে তারা বিভিন্ন পুরুষদেরকে আকৃষ্ট করে পুরুষ সমাজকে এবং নারী সমাজকে কলুষিত করছেন। "আল্লাহ তাআলা আরো বলেছেন যে,যে সমস্ত নারী কাপড় পড়েও উলঙ্গ অবস্থায় থাকবে তারা জাহান্নামের শাস্তি  উপভোগ করবে"তাই যেহেতু এই থার্টি ফার্স্ট নাইট একটি বিজাতীয় সংস্কৃতি বা খ্রিস্টীয় সংস্কৃতি তাই এমন কোন উৎসবকে ইসলাম ধর্ম স্বীকৃতি দেয় না।

এ থার্টি ফার্স্ট নাইটে আমরা অনেক ধরনের অসামাজিক কর্মকাণ্ড দেখতে পাই যেগুলো হল বিভিন্ন নৃত্য-সংগীত ধূমপান মদ্যপান  অশ্লীলতা বেহায়াপনা যে না এবং ব্যভিচার সহ বিভিন্ন রকম খারাপ কর্মকাণ্ড যেগুলো ইসলামের নিষেধ রয়েছে। তাই থার্টি ফাস্ট এর মতো খ্রিস্টীয় কালচারকে বাদ দিয়ে ইসলামিক জীবন গড়তে সচেতন হন।

থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন করা কি ইসলামে হারাম-থার্টিফার্স্ট নাইট সম্পর্কে ইসলাম কি বলে

থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন করা কি ইসলামে হারাম? থার্টি ফার্স্ট নাইট সম্পর্কে ইসলাম কি বলে। ইসলামে এই থার্টি ফার্স্ট নাইট রাতকে হারাম বলে ঘোষণা করা হয়েছে কেননা ডিসেম্বর মাসে শেষ দিন যা থার্টিফার্স্ট নাইট নামে পরিচিত এই রাতটিতে রাত ১২ টার পর থেকে খ্রিস্টীয় নববর্ষ বা ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনের নামে নানারকম নৃত্য, গান, আতশবাজি, ধূমপান, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা ইত্যাদি পালন করা হয়। তাছাড়া এই রাত্রিতে অনেক নারীরা নগ্ন হয়ে ছবি তোলা ছাড়াও তারা বিভিন্ন রকমের খারাপ ভঙ্গিতে নাচ গান পরিবেশন করে থাকে। 

তাই থার্টিফার্স্ট নাইট স্ট্যাটাস হিসেবে এগুলো বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম গুলোতে আপলোড দিয়ে থাকে যেগুলো আমাদের আজকের যুবসমাজ কে ধ্বংসের পথে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। যেহেতু থার্টি ফার্স্ট নাইট রাতটি রাত বারোটা বা মধ্যরাতে পালন করা হয় সেহেতু এই রাতটি বা এই সময়টি মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য তাহাজ্জুদের সময়। আর এই তাহাজ্জুদের সময় আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং তার বান্দাদের কাছে ইবাদতের জন্য ডাকতে থাকেন। 

এবং আল্লাহ তা'আলা বলে থাকেন যে"তোমাকে কোথায় আছো জেগে ওঠো আমার কাছে সাহায্য চাও ক্ষমা চাও এবং তোমার মনে যত চাওয়া পাওয়া রয়েছে আমার কাছে চাও আমি তোমাদের সেই চাওয়া পাওয়া গুলোকে পরিপূর্ণ করে দেবো"তাই এই তাহাজ্জুদের মত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মুসলমানদের জন্য বিভিন্ন রকম নৃত্য এবং গান পরিবেশন এর মাধ্যমে মগ্ন থাকা বা দৃষ্টি আকর্ষিত থাকা ইহকাল এবং মৃত্যুর পরবর্তী পরকালের জন্য ক্ষতি। 

তাই এই সকল কারণগুলোতে ৩১ ডিসেম্বর বা থার্টি ফার্স্ট নাইট এর এই অনুষ্ঠান প্রতিটি মুসলমানের জন্য নিষিদ্ধ। যেহেতু থার্টি ফার্স্ট নাইট রাত্রি টিকে ইসলামে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে সেহেতু এই রাত্রে সম্পর্কিত কোন স্ট্যাটাস ও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় বা বন্ধুবান্ধবের মাঝে দেওয়াও নিষিদ্ধ।

থার্টি ফাস্ট নাইট ও ইসলাম

যেহেতু বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই এই উৎসবটি বা থার্টিফার্স্ট নাইট পালন করা হয় সেহেতু মুসলমান দেশগুলোতে এই থার্টিফার্স্ট নাইট বা ৩১ ডিসেম্বর এর শেষ রাত পালিত হয় না। যেহেতু বছরের শেষ রাত এবং নববর্ষের সুচনা লগ্নে খ্রিস্টানরা এই উৎসবটি পালন করে থাকে। যেহেতু ইসলামে এই থার্টি ফাস্ট নাইট এই উৎসবকে অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে তাই আমরা এখন এই থার্টি ফাস্ট নাইট ও ইসলাম সম্পর্কে আরো তথ্যাবলী গুলো জানব। যেহেতু এই দিনে থার্টি ফার্স্ট নাইট মুসলমানদের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সে তো প্রত্যেক মুসলমানদের এই থার্টি ফার্স্ট নাইট সম্পর্কে জানা উচিত।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনের মধ্যে এই সম্পর্কে যা বলেছেন তা হল। "আল্লাহ তাআলা বলেন, যে ব্যাক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মকে অনুসরণ করবে বা সে ধর্মের নিয়ম গুলো সে পালন করবে তার আমল কখনোই গ্রহণ করা হবে না যার কারণে সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের শামিল হবে"।(সূরা আল ইমরান, আয়াতঃ নাম্বার ৮৫) আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম মুশরিকদের সাহায্য কখনও গ্রহণ করতেন না। 

অন্য একটি হাদিসে রয়েছে "হযরত আয়েশা রাঃ হতে বর্ণিত তিনি বলেন যে, একদা এক মুশরিক বিশ্ব নবীর কাছে এসে যুদ্ধে যাওয়ার বা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে বিশ্বনবী তাকে বলেন যে তুমি ফিরে যাও আমরা মুসলিমদের সাহায্য চাই না।"কোরআন হাদিস গবেষণাকারী বিভিন্ন স্কলাররা কোরআনে এই থার্টি ফাস্ট সম্পর্কে বা বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন উৎসব সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন বলে তারা এই থার্টি ফার্স্ট নাইট বা ৩১ ডিসেম্বর ইসলামে অবৈধ উৎসব হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

থার্টি ফার্স্ট নাইট সম্পর্কে হাদিস

  • যেহেতু এ রাত্রিতে আনন্দ উদ্দীপনা ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক খারাপ কর্মকান্ডে মধ্যে সকলে নিমজ্জিত থাকে তাই অনেকেই খারাপ কার্যকলাপে যুক্ত হয়। তাই সে সম্পর্কে "আল্লাহ তা'আলা বলেন, তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের অগ্নিকুণ্ড থেকে বাঁচাও যা কাফেরদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে"। (সূরা আলে ইমরান আয়াত নংঃ ১৩১)
  • যেহেতু এই রাত্রিতে বর্তমান সময়ের যুবক-যুবতীরা বিভিন্ন রকম অশ্লীলতা এবং বেহায়াপনা তাছাড়া বর্তমান সময়ের নারীরা বিভিন্ন আটোসাট পোশাক এবং অর্ধনগ্ন পোশাক পরিহিত অবস্থায় চলাফেরা করে তা এ প্রসঙ্গে "নবী করীম সাঃ বলেছেন যে, ঐ সকল নারী পোশাক পরিহিত অবস্থায় রয়েছে কিন্তু প্রায় নগ্ন তারা পরপুরুষকে আকৃষ্ট করবে এবং নিজেরাও তাতে আকৃষ্ট হবে কেয়ামতের দিন তাদের মাথা, বক্ষ, উঁচু কাঁধ, বিশিষ্ট উটের নেয় হবে এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না তাছাড়া তারা জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না।"(সহীহ মুসলিমঃ হাদীস নং: ২১২৮)
  • বর্তমান সময়ের যুবক-যুবতীরা এমনকি মুসলমান সম্প্রদায়ের অনেক যুবক যুবতী রয়েছে যারা থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ জেনেও তারা একজন অপরকে মেসেজের মাধ্যমে আতশবাজি পটকা বাজি ইত্যাদি মাধ্যমে আনন্দ উপভোগ করে থাকে যা ইসলামের কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।
  • এ প্রসঙ্গে "রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন যে, যে ব্যক্তি কোন জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করল সে তাদেরই দলভুক্ত। (মিশকাত শরীফঃ হাদিস নং: ৪৩৪৭)
  • যেহেতু এই রাত্রিতে জেনার মত নানাবিধ খারাপ কর্মকান্ড চলমান রয়েছে সেহেতু এ প্রসঙ্গে "আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন, তোমরা যিনার মতো অশ্লীল কাজের নিকটবর্তী হয়ো না ।(সূরা বনী-ইসরাইলঃ আয়াত নং: ৩২)।

থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করা কি ইসলামে বৈধ

বন্ধুরা এখন আমরা আমাদের এই পোষ্টের মধ্যে যে বিষয়টি জানতে চলেছি তা হল থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করা কি ইসলামী বৈধ? আমরা ইতোমধ্যে আলোচনা করেছি যে থার্টিফার্স্ট নাইট ইসলামে উদযাপন করা কি জায়েজ যেহেতু থার্টি ফাস্ট নাইট হলো একটি খ্রিস্টীয় কালচার বা খ্রিস্টের সংস্কৃতি তাই এটি উদযাপন করা ইসলামে একদমই অবৈধ হ্যাঁ বন্ধুরা কোন মুসলমানদের সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে না। 

কেননা ইসলাম কখনো কোন খারাপ বা অবৈধ কর্মকাণ্ডকে স্বীকৃতি দেয় না। আর যেহেতু থার্টি ফার্স্ট নাইটে বিভিন্ন রকম খারাপ কর্মকান্ড মাধ্যমে এই রাতটিকে উদযাপন করা হয়। আর যে সকল ব্যক্তিরা এই অবৈধ কাজের সঙ্গে লিপ্ত রয়েছে তারা কখনো মুমিন হতে পারে না।"আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন যে, যে সকল লোকেরা বিজাতীয় উৎসব পালন করে থাকে তারা কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না বা জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না"। 

আরো পড়ুনঃ ইসলামিক বিবাহ রীতি-বিবাহের ১০টি উপকারিতা জেনে নিন

এবং সেই সাথে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন"একজন মুমিন মুসলমান কখনো বিজাতীয় সংস্কৃতিতে নিজেকে আকৃষ্ট করাতে পারে না বা নিজেকে জড়াতে পারে না।"তাই থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপন যেহেতু ইসলামে অবৈধ সেহেতু এই রাতটি পালন করা একজন মুসলমানের জন্য কাম্য নয়।

উপসংহারঃ ৩১ ডিসেম্বর থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করা কি জায়েজ-থার্টি ফার্স্ট নাইট সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

প্রিয় বন্ধুরা আজকে আমরা আপনাদেরকে থার্টি ফার্স্ট নাইট কি, থার্টি ফার্স্ট নাইট অর্থ কি, থার্টিফার্স্ট নাইটকে কি বলা হয়, থার্টি ফাস্ট নাইট সম্পর্কে ইসলাম কি বলে, থার্টি ফাস্ট নাইটের ইতিহাস, থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে ইসলাম কি বলে,  থার্টি ফার্স্ট নাইট পলন করা কি ইসলামী জায়েজ, থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপন করা কি ইসলামে হারাম। 

থার্টি ফার্স্ট সম্পর্কিত আরো কোন তথ্য আপনাদের জানা থাকলে নিজে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে আমাদেরকে জানাতে পারেন আর থার্টি ফার্স্ট নাইট এর মত খ্রিস্টীয় কালচার থেকে দূরে থাকার জন্য সবাইকে অনুরোধ করা হচ্ছে। জাহান্নামের আগুন থেকে নিজে বাঁচুন এবং অপরকে বাঁচান। তাই সকলে থার্টি ফার্স্ট এর মত অশ্লীলতা এবং বেহায়াপনা দিন থেকে বাঁচতে সবাই এই দিনটিকে প্রত্যাখ্যান করুন। আমাদের নতুন আর্টিকেল পাবলিশ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন সঙ্গে থাকুন ধন্যবাদ। ২০২

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url