টাইফয়েড রোগের লক্ষণ-টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায়

প্রিয় পাঠক আপনাকে সকলেই টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সমূহ জানেন আপনার অনেকেই টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানেন না তাই আজকে আপনাদের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত কারণ আমাদের দেশে ঋতু পরিবর্তনের ফলে এবং ভৌগোলিক আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে প্রতিনিয়তই আমরা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকি তাই আজকে আপনারা যদি টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।

টাইফয়েড জ্বর

বিভিন্ন ধরনের শরীরে টাইফয়েডের জীবাণু প্রবেশ করতে পারে আপনি যদি অনলাইনে মাধ্যমে টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ সমূহ নিয়ে সঠিক কোন তথ্য জানতে চান তাহলে আপনি আজকের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন তাহলে চলুন এবার আমাদের টাইফয়েড রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে

এক নজরে দেখে নিন

টাইফয়েড রোগের লক্ষণ-টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ

টাইফয়েড জ্বর হলো এক ধরনের পানিবাহিত বা খাদ্যবাহিত রোগ এটি আমাদের দেহের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের দূষিত খাবার এবং দূষিত পানির মাধ্যমে প্রবেশ করে থাকে অনেকে রয়েছেন যারা সাধারণত একটু জ্বর হলেই মনে করে থাকেন যে কোভিড ১৯ এর প্রভাব পড়েছে আসলে আপনাদের এটি ভুল ধারণা তাহলে এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে টাইফয়েড জ্বর হয়েছে কিনা তা আমরা কিভাবে বুঝবো।

টাইফয়েড জ্বরের বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে সেগুলি আপনার মধ্যে প্রতিস্থাপিত হলে আপনাকে বুঝতে হবে যে আপনাদের টাইফয়েড জ্বর হয়েছে আক্রান্ত হওয়ার ৬ থেকে ৭ দিন পর এর লক্ষণগুলো প্রকাশিত হয়। এবার টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণগুলো জেনে নিন।

  • শরীরে প্রচুর পরিমাণে ব্যথা হওয়া
  • মাথা ব্যথা হওয়া বা মাথা ভারী ভারী ভাব
  • কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা ডায়রিয়া হওয়া 
  • পেট ব্যথা হওয়া 
  • খাবারের প্রতি অরুচি  
  • প্রচন্ড কাশি হওয়া 
  • বমি হওয়া 
  • শরীরের ম্যাজ ম্যাজ ভাব 
  • ১০৪ ডিগ্রির উপরে জ্বর থাকা 
  • ওষুধ খাওয়া অবস্থায় শরীরের জ্বর থাকা 
  • হার্টবিট কমে যাওয়া 
  • পিঠে অথবা পেটের ওপরে দাগ দেখা দেওয়া

টাইফয়েড জ্বর কেন হয়?-টাইফয়েড জ্বর হওয়ার কারণ কি?

টাইফয়েড জ্বর কেন হয় টাইফয়েড জ্বর হওয়ার কারণ কি আজকে আমরা এই বিষয়ে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চলেছি টাইফয়েড জ্বর নানা কারণেই হতে পারে আমরা প্রথমেই বলতে পারি যে টাইফয়েড জ্বর যেহেতু একটি পানি পানি তো রোগ তাই এটি সংক্রমিত বেশি হতে পারে টাইফয়েড জ্বর বিভিন্ন পানি দূষণের কারণেই নয় বরং বিভিন্ন দূষিত খাবারের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে জ্বরের মাধ্যমে আমাদের শরীরে টাইফয়েডের যে সকল উপসঙ্গগুলো দেখা যায় তা টাইফয়েড জ্বর আমাদের দেহের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া সাহায্যে ছড়িয়ে পড়ে।

আর এই ব্যাকটেরিয়া গুলোর নাম হল সালমোনিলা টাইপিং যার কারণে টাইফয়েড জ্বর হয়ে থাকে এই ব্যাকটেরিয়া গুলো আমাদের দেহের মধ্যে আমাদের মল এবং মৌখিক পথের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে একজন সংক্রামিত ব্যক্তির মল এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া বের হয়ে যায়। আর এই কারণেই সংক্রমিত পদার্থের সঙ্গে যে সকল দূষিত ফল শাকসবজি কিংবা পানি খাওয়া হয় মূলত এই সকল কারণেই সংক্রমণটি আমাদের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।

আরো পড়ুনঃ ব্লাড ক্যান্সার কেন হয়? ব্লাড ক্যান্সার উপসর্গগুলো জেনে নিন

আমাদের দেশ বাংলাদেশ যেহেতু ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় রয়েছে তাই এখানে সংক্রমিত হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে আমাদের দেশ উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে এখানে বাসস্থানগুলো বেশি ঘনবসতিপূর্ণ তাই যেকোনো বয়সের ব্যক্তিরাই টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হতে পারেন তবে যে সকল ব্যক্তির দেহের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি পরিমাণে থাকে তাদের দেহে টাইফয়েড রোগের প্রবেশের সম্ভাবনা খুব কম থাকে।

টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে

টাইফর জ্বর আমাদের শরীরে লক্ষণ প্রকাশ পাই তা জন্ম নেওয়ার প্রায় 14 দিন বা দুই সপ্তাহ পর থেকে। টাইফয়েড রোগ আমাদের শরীরে এমন একটি রোগ যা বোঝা যায় আমাদের অনেক দিন সময় লেগে যেতে পারে তারপর জ্বর হলে প্রথমে আমাদের শরীরকে হালকা করে দেয় তাইফার জ্বর আমাদের শরীরে আক্রমণ করে থাকে। টাইফয়েড জ্বর আমাদের দেহের মধ্যে অতি দ্রুত প্রবেশ করে থাকে এবং তা আমাদের দেহের মধ্যে প্রায় অনেকদিন ধরেই বসবাস করে। 

আরো পড়ুনঃ সিজোফ্রেনিয়া লক্ষন- সিজোফ্রেনিয়া রোগ কেন হয় জেনে নিন

টাইফয়েড জ্বর হলে আমাদের উচিত অতি দ্রুতই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সুচিকিৎসা গ্রহণ করা টাইফয়েড হওয়ায় আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর বৃদ্ধি পেতে থাকে তারপর আস্তে আস্তে আমাদের দেহে জ্বর কমতে থাকে। টাইফয়েড জ্বর হতে সময় লাগে অনেক বেশি প্রায় ২০ দিনের মতো তাই আপনার উচিত টাইফয়েড জ্বর হওয়ার পূর্বেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করা।

টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার-শিশুর টাইফয়েড জ্বরের লক্ষন

বন্ধুরা আজকে আমরা আপনাদের সামনে টাইফয়েড জ্বর কেন হয় তারপর জ্বর হওয়ার কারণ কি টাইফয়েড হলে কি কি সমস্যা হয় টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি এখন আপনাদের সামনে যেটি নিয়ে আলোচনা করব সেটি হল টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার শিশুর টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ। জানতে হলে মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

বিশেষ করে টাইফয়েড রোগের অন্যতম উপসর্গ হচ্ছে জ্বর আসা টাইফয়েড রোগের লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে থাকে টাইফয়েড জীবাণু দেহের মধ্যে প্রবেশ করার ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে। এর মধ্যে শরীরে যখন টাইপার রোগের জীবাণু প্রবেশ করে তখন প্রথম কয়েকদিন বা ৪/৫ দিন জ্বর বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করে এ ক্ষেত্রে আপনার জ্বর বৃদ্ধি পেতে পারে আবার কমতেও শুরু করে সম্পূর্ণরূপে ভালো হয় না।

আরো পড়ুনঃ নিউমোনিয়া রোগের লক্ষন ও তার প্রতিকার জানুন

জ্বর সাধারণত কম বেশি হওয়ার পাশাপাশি শরীরের আরও বিভিন্ন রকমের সমস্যা আস্তে আস্তে প্রকাশিত হতে থাকে যেমন মাথা ব্যথা গা হাত প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হওয়া শারীরিক দুর্বলতা এগুলো দেখা দিয়ে থাকে তাছাড়া টাইফয়েড হওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। তবে যদি শিশুদের ক্ষেত্রে টাইফয়েড রোগ দেখা দেয় তাহলে সে ক্ষেত্রে তাদের ডায়রিয়া এবং বমি বমি ভাব হতে পারে।

টাইফয়েডে আক্রান্ত রোগীর শরীরে তাপমাত্রা সাধারণত ১০৩ থেকে ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত হয়ে থাকে তবে এর বেশিও দেখা দিতে পারে এবং সেই সাথে অন্য যে সকল উপসর্গগুলো রয়েছে সেগুলো দেখা যেতে পারে যেমন ভীষণ মাথাব্যথা মুখের ভেতর বা জিহ্বাতে ঘা, ক্ষুধামন্দ ভাব, খাবারের প্রতি অরুচি ভাব এবং কোষ্ঠকাঠিন্যসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এ সমস্ত সমস্যা গুলো থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনার শিশুকে অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারা চিকিৎসা নিন। এবং তার প্রতি আরো যত্নবান হন।

টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত 

টাইফয়েডের সমস্যাই কি ধরনের খাবার খাওয়া উচিত বা কোন খাবারগুলো খেলে আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব বিশেষ করে সালমোনেলা প্যারাটাইফি নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার কারণে টাইফয়েড জ্বর হয়ে থাকে।

টাইফয়েড জ্বর হলে আমাদের শরীরের রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় বা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তাই আমাদের উচিত টাইফয়েড জ্বর হলে আমাদের খাদ্যের তালিকা পরিবর্তন করা পরিবর্তন করতে হলে বা করতে পারলে আমরা টাইফয়েড নামক রোগের হাত থেকে মুক্তি পেতে পারি। নিচে টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত সেগুলো আলোচনা করা হলোঃ

  • ডাবের পানিঃ টাইফয়েড জ্বর হলে আপনার শরীরে পানিবাহিত রোগের সমস্যা দেখা দেয় যেহেতু পানি বাহিত রোগের সমস্যা দেখা দেয় সেহেতু আপনার ডায়রিয়া হতে পারে ডায়রিয়ার ফলেও কেবল শরীরে তরল বা পানি বের হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে আপনাকে বিভিন্ন চিকিৎসকরা ডাবের পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকবে খুবই উপকারী তাছাড়া আপনি বিভিন্ন ফলের রস এবং শরবত খেতে পারেন।
  • কার্বন-হাইড্রেট জাতীয় খাবারঃ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে দ্রুত সুস্থ করতে হলে কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত বেশি পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খেলে হজম ক্রিয়া বেশি হয় এবং শরীরের পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি পায় কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের মধ্যে যেগুলো পড়ে সেগুলো হলো ভাত ও সিদ্ধ আলু ইত্যাদি।
  • আঙ্গুরঃ টাইফয়েড হওয়ার পর শরীর অতি দ্রুত সুস্থ করে তুলতে হলে শুকনো আঙ্গুর প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন টাইফয়েডের সময় যদি প্রচন্ড জ্বর হয় তাহলে চাঁদ থেকে পাঁচটা আঙ্গুর ভিজিয়ে রাখতে পারেন এবং আপনি তার সঙ্গে চাইলে লবণ মিশিয়েও খেতে পারেন।
  • দুগ্ধজাত খাবার ওঃ টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীদের শরীর যেহেতু প্রচন্ড ব্যথা হয়ে থাকে এবং শারীরিক দুর্বলতা হতে থাকে তাই এই শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে হলে আপনাকে দুগ্ধ যা খাবার গ্রহণ করতে হবে এটি আপনার দেহে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে দুগ্ধজাত খাবারের মধ্যে যে সকল খাবার গুলো পড়ে তা হল দই, পনির ও ছানা ইত্যাদি।
  • উচ্চ ক্যালরি যুক্ত খাবারঃ টাইফার আক্রান্ত হলে রোগীদের শরীর প্রচন্ড দুর্বল হয়ে পড়ে এবং শরীরের ওজন অতি দ্রুত কমতে থাকে তাই এই সমস্যা দূর করতে হলে আপনার উচিত প্রতিনিয়ত উচ্চকনোযুক্ত খাবার খাওয়া উচ্চকালিত খামারে প্রচুর পরিমাণে শক্তি ওজন বাড়াতে সাহায্য করে যেমন মিষ্টি আলু, কলা ইত্যাদি।

টাইফয়েড হলে কি চুল পড়ে যায়

টাইফয়েড এর ক্ষতিকর দিকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য যে সকল বিষয়বস্তুগুলো রয়েছে সেগুলো হল আপনার পরিপাকতন্ত্র থেকে রক্তক্ষরণ, মস্তিষ্কে প্রবাহ সৃষ্টি, স্নায়ু এবং কিডনিতে বিভিন্ন সমস্যা হওয়া, মেরুদন্ডে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি ইত্যাদি। টাইফয়েড যেহেতু নির্দিষ্ট কোন বয়স অনুযায়ী হয় না যে কোন বয়সের মানুষই টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হতে পারে তবে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের মতে সতর্কতা অবলম্বন না করলে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। 

আরো পড়ুনঃ অল্প বয়সে চুল পড়ে যায় কেন? অল্প বয়সে চুল পড়া বন্ধ করার উপায় জানুন

টাইফয়েডের কারণে আপনার থাইরয়েডের সমস্যা জাগতে পারে এছাড়া দীর্ঘদিন টাইফয়েড আক্রান্ত থাকলে চুল পড়ার সমস্যা বাড়তে পারে টাইফয়েড নিরাময়ে বেশ কিছু ঔষধ রয়েছে যেগুলো আপনার চুল পড়তে পারে তাছাড়া টাইফয়েড এর কারণে মাথায় যে সকল ছত্রাক ও খুশকির জন্ম হয় সেগুলো অপুষ্টি ও রক্তশূন্যতার ফলে আপনার মাথাতে ভিটামিনের অভাব দেখা দেয় সেই কারণেও আবার চুল পড়ে যেতে পারে তাই আপনাকে সব সময় মানসিক স্টেজ বা উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে তাহলে কেবল আপনি টাইফয়েড রোগের হাত থেকে আপনার চুল পড়ার হাত থেকে বাঁচাতে পারবেন।

টাইফয়েড রোগের লক্ষণ-টাইফয়েড এর পরবর্তী সমস্যা

টাইফয়েডের জীবাণুগুলোর মধ্যে যে সকল জীবনেও গুলো আমাদের দেহে প্রবেশ করে থাকে এবং যেগুলো জন্য আমাদের টাইফার্ড হয়ে থাকে তা হল সালমনেলা টাইফি ও সালমনিলা প্যারাটাই ফ্রি শরীরের রক্তের সঙ্গে টাইফয়েডের জীবাণু মিশ্রিত হলে যে সকল সমস্যাগুলো হয় সেগুলো হলঃ

টাইফয়েড রোগের প্রাথমিক সমস্যা

  • প্রচুর পরিমাণে মাথাব্যথা 
  • কোষ্ঠকাঠিন্যসহ নানা ধরনের সমস্যা
  • প্রচুর পরিমাণে জ্বর 
  • শারীরিক দুর্বলতা 
  • গলা ব্যথা হওয়া 
  • পেট ব্যথা হওয়া এবং 
  • ডায়রিয়া

টাইফয়েড এর জোটের সমস্যাগুলোর মধ্যে যেগুলো রয়েছে সেগুলো হলঃ

  • স্নায়ু কোষ সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা 
  • কিডনি জটিলতা 
  • মস্তিষ্কে সৃষ্টি 
  • মেরুদন্ডের সমস্যা সৃষ্টি 
  • পরিপাকতন্ত্র থেকে রক্তক্ষরণ 
  • শরীরের ফোড়া 
  • নিউমোনিয়া এবং 
  • পিত্তথলির বিভিন্ন সমস্যা

আমাদের দেশে গ্রীষ্ম এবং বর্ষা ঋতুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায় সেগুলো হলো টাইফয়েড এবং ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব। আমাদের উচিত এই দুই ঋতুতে অবশ্যই জয় আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা সেবন করা এবং সতর্কতা  থাকা। যেহেতু আমরা যেকোনো রোগের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন করতে হয় বা আমরা যেকোনো রোগের জীবাণু এন্টিবায়োটিক রোদে হয়ে পড়ে তাই এই রোগ গুলো শনাক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের নিজে নিজে থেকেই কোন ঔষধ সেবন করা উচিত নয় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করা উচিত।

টাইফয়েড জ্বর কি ছোঁয়াচে 

টাইফয়েড জ্বর যেহেতু একটি পানিবাহিত বা দূষিত খাবারের মাধ্যমে যে ব্যাকটেরিয়া রয়েছে সে ব্যাকটেরিয়ার মধ্য দিয়ে প্রবেশ করে থাকে তাই এটিকে বলা যায় এটি একটি ছোয়াচে রোগ এটি মানুষ দ্বারা সংক্রমিত হয়ে বা ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে ছড়ায় তাই এটিকে বলা যায ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ বা টাইফয়েড। টাইফয়েড জ্বর সাধারণত দূষিত পানি এবং দূষিত খাবারের মাধ্যমেই আমাদের দেহে সৃষ্টি হতে পারে। 

আরো পড়ুনঃ ব্লাড ক্যান্সার হলে মানুষ কতদিন বাঁচে জেনে নিন

এটি বেশিরভাগ দেখা যায় যে সকল ব্যক্তি টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত এবং সংক্রমিত সেই ব্যক্তির মাধ্যমে যদি কোন খাবার তৈরি করা হয় তাহলে তার সংস্পর্শের মাধ্যমে সেই খাবার খাওয়ার ফলে টাইফয়েড রোগ হয়ে থাকে। এছাড়াও টাইফয়েড জ্বরের আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে ওঠার পরও তার দেহের মধ্যে কোনো না কোনোভাবেই ব্যাকটেরিয়া রয়ে যায় আর এই টাইফয়েড রোগের আক্রান্ত হয়। 

এবং সে যদি সঠিক চিকিৎসা না গ্রহণ করে থাকে তাহলে তার মেরুদন্ড সংক্রমণ এবং রক্তক্ষরণ ছাড়াও তার কিডনিতে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই আপনার পরিবারের যদি কেউ টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে আলাদা ঘর আলাদা খাবার আলাদা কাপড়চোপড় সহ তাকে আলাদা করে রাখতে হবে কেননা একজনের কাছ থেকে পরিবারের সকলের মাধ্যমে এ রোগের ছড়াছড়ি হতে পারে।

টাইফয়েড জ্বর হলে কি গোসল করা যায়

আমাদের মধ্যে প্রায় অনেকেই আছেন যারা ধারণা করে থাকেন যে টাইফয়েড জ্বর হলে গোসল করা যাবে কিনা যদি গোসল করলে ঠান্ডা লেগে যায় এবং গোসল করলে জ্বরের তীব্রতা বেড়ে যায় ইত্যাদি। আমাদের বাংলাদেশী প্রায়ই জ্বর হলে আমরা অনেকেই সাধারণ যে সমস্ত কাজগুলো করে থাকে তা হল মাথায় পানি ঢালা, মাথায় পানি পটি দেওয়া ইত্যাদি কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে বলা হয়েছে যে টাইফয়েড জ্বর হলে গোসল করা একেবারেই নিষিদ্ধ নয়। 

আরো পড়ুনঃ সিজারের পর গোসল করার নিয়ম-সিজারের কতদিন পর গোসল করা উচিত জেনে নিন

টাইফয়েড জ্বর হলেও আপনি গোসল করতে পারেন তবে আপনাকে চেষ্টা করতে হবে গরম পানি দিয়ে গোসল করা এবং মাথায় বেশি পানি খাওয়া এতে আপনার দেহের তাপমাত্রা কমে যাবে আপনি কিছুটা স্বস্তি বোধ করবেন তাছাড়া আপনি জ্বর কমানোর জন্য একটি গামছা ভিজিয়ে আপনার কপালে অথবা ঘাড়ে পানিপট্টি দিতে পারেন।

টাইফয়েড জ্বরের ঔষধের নাম-টাইফয়েড জ্বরের অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধের নাম

আপনার অনেকেই গুগলের মাধ্যমে টাইফয়েড জ্বরের ঔষধ বা টাইফার অ্যান্টিবায়োটিক সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেছেন আজকে আমরা আপনাদেরকে টাইফয়েড জ্বরের ঔষধ অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ গুলো সম্পর্কে জানাবো।

টাইফয়েড জ্বরের জন্য অভিজ্ঞ কিছু চিকিৎসকের মতে ওষুধ হিসেবে ফার্স্ট জেনারেশন বেশি কার্যকর হিসেবে ধরা হয়ে থাকে কিন্তু সাধারণত এ ধরনের ঔষধ গুলোর ক্ষমতা বেশি হওয়ায় অনেক চিকিৎসকেরাই সেফটক্সিন ইঞ্জেকশন দিয়ে থাকেন তবে এই ইনজেকশনের পরিমাণটি নির্ভর হয়ে থাকে বিভিন্ন রোগের অবস্থার উপরে। 

তবে যদি নিয়মিত ভাবে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে ইনজেকশন করেন তাহলে দিনের মধ্যে রোগী সুস্থতা লাভ করতে পারে। তবে আমরা অনেকেই যে কোন জ্বর হলে অ্যান্টিবায়োটিক বিভিন্ন মেডিসিন গ্রহণ করে থাকি এই অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ গুলো আমাদের দেহের ক্ষেত্রে বেশি ক্ষতিকর হতে পারে কারণ এই এন্টিবায়োটিক ওষুধের ফলে আমাদের শরীরের কার্যক্ষমতা গুলো কমিয়ে দেয়।

তবে টাইফয়েড জ্বরের বেশ কিছু অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ রয়েছে যেগুলোর মধ্যেঃ

  • এমপিসিলিন 
  • ক্লোরামফেনিকল 
  • এমোক্সিসিলিন 
  • সিপ্রোফ্লক্সাসিন।

তাছাড়া আপনাকে টাইফয়েড জ্বর হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি এবং খাবার স্যালাইন গ্রহণ করতে হবে।

বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতে প্রথমে আপনাদের প্যারাসিটামল ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা শুরু করা উচিত। তবুও অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে আপনার শারীরিক অবস্থার ওপর ফলাফল ভিত্তি করে এন্টিবায়োটিক মেডিসিন দিয়ে আপনার সেবন করে সেবা নেওয়া উচিত।

(বিদ্রঃ টাইফয়েড জ্বর এর জন্য ওষুধ সেবনে পূর্বে অবশ্যই আপনাকে রেজিস্টার্ড চিকিৎসক বা অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করা উচিত। আমরা উক্ত পোস্টে যে সকল ওষুধগুলো উপস্থাপন করেছি তা শুধুমাত্র আপনাদের সুবিধার্থে তাছাড়া আপনাদের কে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে হবে)

টাইফয়েড থেকে বাঁচার উপায় -টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায়-টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে করনীয়

টাইফয়েড জ্বর থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে আপনাকে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থাকতে হবে তাছাড়া বিভিন্ন ডাক্তারগণ টাইফয়েড রোগের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ ব্যবহার করে থাকেন তবে অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ কিন্তু আবার দুই ধরনের হয়ে থাকে একটি হল মুখে খাওয়া এবং অপরটি হল ইঞ্জেকশন। 

এই অ্যান্টিবায়োটিক হলো টাইপ হওয়ার জলের মূল চিকিৎসা তাছাড়া আপনাকে টাইফয়েড জ্বরের ঔষধের চিকিৎসার পাশাপাশি ঘরোয়া কিছু উপায়ে রয়েছে যেগুলো আপনি অনুসরণ করে চললে অতি দ্রুত আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন তাহলে টাইফয়েড জ্বর থেকে বাঁচার জ্বর ভালো করার যে উপায় গুলো রয়েছে সেগুলি জেনে নেওয়া যাক।

  • অ্যাপেল সিডার ভিনেগার সেবন করতে পারেন যেহেতু এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এসিডিক উপাদান যা আপনার জ্বর কমাতে সাহায্য করবে
  • রান্নাই আদা ব্যবহার করতে পারেন কেননা আদতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার রক্তকে বিশুদ্ধ করতে সহযোগিতা করবে তাছাড়া আপনার যদি গলাতে শুষ্ক কাশি থেকে থাকে তাহলে আদা আপনার জন্য বেশি উপকারী।
  • ঠান্ডা পানি দিয়ে আপনাকে কখনো গোসল করা যাবে না অবশ্যই আপনাকে গামছা ভিজিয়ে গামছ করতে হবে যেন শরীরে তাপমাত্রা কমে যায়।
  • ফোটানো পানি বা পরিষ্কার পানি বেশি বেশি ব্যবহার করতে হবে
  • টয়লেট ব্যবহার করার পর অবশ্যই আপনার হাত ভালো হবে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে
  • রাস্তার পাশে ফুটপাতে বিক্রি করা যেসকল খাবার রয়েছে সেগুলো আপনাকে বর্জন করতে হবে কেননা সেখানে যে সকল পানি রয়েছে তা বিশুদ্ধ নয়।
  • ২৪ ঘন্টার মধ্যে সংরক্ষণ করা পানি পান করতে হবে যেন তা দ্রুত দূষিত না হয়।
  • খাবার রান্না করার সময় আপনাকে ভালোভাবে খাবারগুলো সিদ্ধ করে নিতে হবে।
  • ফলমূল শাকসবজি রান্নার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

টাইফয়েডের ঝুঁকি কাদের বেশি থাকে?

যেকোনো বয়সেরই মানুষের টাইফয়েড রোগ হতে পারে তবে এক্ষেত্রে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে শরীরের জীবাণু প্রবেশ করলে যে টাইফয়েড রোগ হবে এমন কোন কথা নেই বরঞ্চ বিশেষ করে কোন ব্যক্তির দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি কম থাকে তাহলে তার দেহের সংক্রমনের বাসা বাঁধতে পারে তবে যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকে তাহলে সে দেহে জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে না। 

তবে যদি আপনাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে এইচআইভি পজিটিভ এইডস রোগীরা এই টাইফয়েড রোগে অতি সহজে আক্রান্ত হতে পারে। আবার যে সব এলাকায় ঘনবসতিপূর্ণ বা বিভিন্ন রোগের প্রাধান্য বেশি দেখা যায় সেসব এলাকা অনেক সময় আমরা ভ্রমণ করে থাকি এই ভ্রমণের ক্ষেত্রে আমরা যদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন না করি তাহলে যে সমস্ত রোগ জীবাণু থেকে থাকে সেগুলো আমাদের দেহের মধ্যে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যায়।

কিভাবে টাইফয়েড জ্বর সনাক্ত করা হয়?

পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেই কেবল চিকিৎসকন বা ডাক্তারগণ বলতে পারেন যে এই রোগে টাইফয়েড জ্বর আক্রান্ত কিনা টাইফার জ্বরে সমাপ্ত করার জন্য আপনাকে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে যেটির নামকরণ হলো ব্লাড কালচার। যদি এই ব্লাড কালচার নমুনায় সালমোনালে নামক ব্যাকটেরিয়া উপস্থিতি পাওয়া যায় তাহলে প্রকারভেদে টাইফয়েড ও প্যারাটাইফাইড এর পার্থক্য করা হয় তাছাড়া জ্বর হওয়ার দুটি সপ্তাহে বা 14 দিন পরে একটি টেস্ট করা হয় যে টেস্টের নাম হলো উইডাল টেস্ট এটি হলো এক ধরনের নন স্পেসিফিক ব্লাড টেস্ট যাতে দেখে চিকিৎসা বুঝতে পারেন যে টাইফয়েড রোগ এর উপস্থিত আছে কিনা।

উপসংহারঃ টাইফয়েড রোগের লক্ষণ-টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায়     

বন্ধুরা আজকে আমরা আপনাদেরকে টাইফয়েড রোগের লক্ষণ বা টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ, টাইফয়েড জ্বর কেন হয়-টাইফয়েড জ্বর হওয়ার কারণ কি? টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে? টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার, শিশুর টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ, টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত, টাইফয়েড জ্বর হলে কি চুল পড়ে যায়, টাইফয়েড রোগের লক্ষণ, টাইফয়েডের পরবর্তী সমস্যা, টাইফয়েড জ্বর কি ছোঁয়াচে, টাইফয়েড জ্বর হলে কি গোসল করা যায়, টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায় ইত্যাদি। বিষয়বস্তু নিয়ে আমরা খুব সুন্দরভাবে আলোচনা করেছি যদি আপনাদের আমাদের এই ব্লগটি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনাদের বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন এবং এমন আরো নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url