শাওয়াল মাসের ৬ রোজার ফজিলত ও আমল

 

প্রিয় বন্ধুরা আমার আপনার অনেকেই রমজান মাসের রোজা পালন করেছেন কিন্তু রমজান মাস শেষে শাওয়াল মাসের দিকে ছয়টি নফল রোজা রাখতে হয় এই রোজা সম্পর্কে আমরা অনেকেই অনেক কিছু জানিনা। তাই আজ আপনাদেরকে শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজার ফজিলত ও আমল সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানাবো। তাই আর দেরি না করে এই পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

শাওয়াল মাসের রোজা

পোস্ট সূচীপত্রঃ শাওয়াল মাসের ৬ রোজার ফজিলত ও আমল

শাওয়াল অর্থ কি?

শাওয়াল শব্দের অর্থ উচু করা, উন্নত করা, পূর্ণতা, উন্নত ভূমি, পাল্লা ভারী, ফলবতি, বিজয়ী হওয়া হস্ত প্রসারিত করা এবং প্রার্থনায় হস্ত উত্তোলন করা। উক্ত শব্দগুলো হচ্ছে শাওয়াল শব্দের অর্থ। শাওয়াল মাসটি হলো আরবি চন্দ্র মাসের দশম মাস। এ মাস থেকেই হজের যাত্রা শুরু হয়। এ মাসের প্রথমে ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হওয়ায় এ মাসে আমলের বরকত বেশি বিশেষ করে শাওয়াল মাসের নামাজ ও ফিতরা আদায় বিশেষ একটি ইবাদত।

শাওয়াল মাসের আমল

আমাদের আজকের বিষয়টি হলো শাওয়াল মাসের ফজিলত আমল নিয়ে। এই ধাপটির মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন শাওয়াল মাসের আমলগুলো সম্পর্কে। রমজান মাস যেমন সিয়াম সাধনার মাস একজন মুসলমান যেমন আল্লাহর রমজান মাসে আল্লাহর দেয়া হুকুম আহকাম গুলো মেনে চলে এবং আল্লাহর প্রতি ভীতি অর্জন করে বা তাকওয়া অর্জন করে। আল্লাহ তাআলা একজন মুসলমানের জন্য যে সকল দায়িত্ব দিয়েছেন সে সকল দায়িত্বগুলোকে মান্য করা।

রমজান মাসে আমরা আল্লাহ শাস্তির ভয়ে রোজা রাখি আল্লাহ ইবাদতে মশগুল হয় বিভিন্ন পাপাচার কাজ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করি। এ মাসে সারাদিন আমরা সিয়াম পালন করে থাকি রাত জেগে তারাবি নামাজ পড়ি পবিত্র আল কোরআন তেলাওয়াত করি এবং তাহাজ্জুদের নামাজ সহ বিভিন্ন ইস্তেগফার পাঠ করতে থাকি। এবং সেইসাথে শাওয়াল মাসে রোজার গুরুত্ব অনেক তাই আমাদের এই শাওয়াল মাসে রমজান মাসের মতই বেশি বেশি নামাজ পড়া এবং আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকা উচিত।

শাওয়াল মাসের রোজা সম্পর্কে হাদিস

শাওয়াল মাস হচ্ছে হজের মাস গুলোর মধ্যে প্রথম মাস এবং আরবি চন্দ্র মাসের দশম মাস। এ মাস থেকে হজের বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু হয়ে থাকে এছাড়া সহীহ হাদিস দ্বারা একটা হাদিস প্রমাণিত আছে যে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন" যে ব্যক্তি রমজান মাসের সম্পূর্ণ রোজা রাখল এবং শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখল সে যেন পুরো বছরের সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করল"।

কোন কোন হাদিসে পুরো শাওয়াল মাস জুড়ে রোজা রাখা উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। এবং উল্লেখ আছে" যে ব্যক্তি রমজান সহ শাওয়াল মাস এবং পুরো বছরের প্রতি সপ্তাহের বুধবার ও বৃহস্পতিবার সিয়াম পালন করবে সেই ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে" তবে পুরো বছর রোজা না করেও শাওয়াল মাসের ৬টি রোজা করলেও হয়।

অন্য এক হাদীসে,

হযরত ওবায়দুল্লাহ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলেন; ইয়া রাসুল আল্লাহ আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব?

তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বললেন তোমার উপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের রোজা রাখো এবং রমজানের পরবর্তী শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখ তাহলেই তোমার পুরো বছরের রোজার হক আদায় হয়ে যাবে। (তিরমিজিঃ১/১৫৩৪)

হযরত আবু আইয়ুব আনসারী(রাঃ) বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি রমজান মাসের ফরজ রোজা গুলো রাখল এবং ছাওয়াল মাসে আরো ছয়টি রোজা রাখল সে যেন সারা বছর ধরেই রোজা রাখল। (সহিহ মুসলিম-১১৬৪)।

শাওয়াল মাসের রোজা কখন রাখতে হয়

আমরা রমজান মাসে রোজা শেষে শাওয়াল মাসে রোজাগুলো করতে ইচ্ছা পোষণ করি কিন্তু আমরা কিছু বিষয় জানা নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ি যেমন শাওয়াল মাসের রোজা কখন রাখতে হয় তা আমরা অনেকেই জানিনা তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আলোচনা শুরু করা যাক।

আরো পড়ুনঃ হালাল ইনকামের উপায়

শাওয়াল মাসে রোজা রাখতে হবে শাওয়াল মাসের পুরো মাসের মধ্যেই আপনি এই ছয়টি রোজা পরিপূর্ণ করতে পারেন । তবে এ রোজাটি যেহেতু নফল রোজা সেহেতু আপনি একটু বিরতির সঙ্গে এ রোজাটি পালন করতে পারে। তবে এই শাওয়াল মাসের রোজা বিরত সঙ্গে করা উত্তম তবে একাধারে করলে কোন ক্ষতি নেই। তবে শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখার আগে যদি রমজান মাসের কোন রোজা কাজা হয়ে থাকে তো অবশ্যই আপনাকে সেই রোজাটি পরিপূর্ণ করতে হবে তা না হলে আপনি শাওয়াল মাসের রোজা করলে হবে না।

শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত

আমরা বিশেষ করে রমজান মাসে রোজা রেখে থাকি তখন আমরা রমজান মাসে নিয়ত করে রোজা রাখি তবে আরবীতে আমরা নিয়ত করে থাকি। কিন্ত আমরা আরবীতে নিয়ত করাটা বেশী জরুরী নয়। যেমন অনেক ব্যক্তি আছে যারা আরবিতে নিয়ত করতে পারেন না। তাই আপনারা বাংলাতে নিয়ত করে থাকেন।

ঐরুপ শাওয়াল মাসেও আরবিতে নিয়ত করার কোন প্রয়োজন নেই। আপনি মনে মনে নিয়ত করলেও আপনার নিয়ত হয়ে যাবে। যেমন আপনি বাংলা নিয়ত করবেন কিভাবেঃ

নিয়তঃ হে আল্লাহ আমি আপনার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে রমজান মাসে রোজা শেষে শাওয়াল মাসের রোজা রাখছি আপনি আমাকে সমস্ত পাপাচার ও শয়তানের অনিষ্ট কামনা থেকে  রক্ষা করুন এবং আপনি আমার এই রোজাকে কবুল করুন।

নফল রোজা রাখার নিয়ম

রমজান মাসে আল্লাহর বিধান মেনে এবং আল্লাহর দেয়া নিয়ম অনুসারে আমরা রোজা রেখে থাকি সেহেতু নফল রোজা রাখার কোন নিয়ম আছে কিনা আমরা আদৌ সেটা জানি না নফল রোজা রাখার নিয়ম আছে কিনা তা জেনে নেয়া যাক।

আরো পড়ুনঃ ইসলামে ধনী হওয়ার উপায়

রমজান মাসে আমরা যেহেতু নিয়ম অনুসারে রোজা রেখে থাকি যেমন পুরো রমজান মাস তাই আমরা রোজা রাখি সেহেতু শাওয়াল মাসের ছয় রোজা যেহেতু নফল রোজা সেহেতু এর বিশেষ কোনো নিয়ম নেই আপনি পুরো শাওয়াল মাস জুড়ে যে কোন সময়ের মধ্যে আপনি এই ছয়টি রোজা পরিপূর্ণ করে ফেলতে পারেন। তবে আপনাকে নফল রোজা পরিপূর্ণ করার আগে ফরজ রোজা যদি কাজা হয়ে থাকে তাহলে সেই কাজা রোজাটি আপনাকে প্রথমে আদায় করতে হবে।

উপসংহারঃ শাওয়াল মাসের ৬ রোজার ফজিলত ও আমল

বন্ধুরা এতক্ষন আপনাদের সামনে শাওয়াল মাসের ছয় রোজার ফজিলত ও আমল সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছি। আশা করি আপনারা এই পোষ্টটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন এমন আরো নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমার ওয়েবসাইটের সঙ্গে থাকুন। এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার এই পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোষ্টের সাথে, ততক্ষণ পর্যন্ত সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url