মাসিক দেরিতে হওয়ার ৭ টি কারন বা অনিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়ার কারণ

 বন্ধুরা আমরা আমাদের আজকের পোস্টে মাসিক দেরিতে হওয়ার ৭ টি কারণ নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি বিভিন্ন কারণে নারীদের মাসিক হতে দেরি হতে পারে কিন্তু অনেকেই মাসিক দেরিতে হয় কেন তা জানতে চান শারীরিক অসুস্থতা সহ মাসিক দেরিতে হওয়ার ৭ টি কারণ আজকে আমরা আমাদের পোস্টে খুব সুন্দর ভাবে আলোচনা করব তাই মানুষের দেরিতে হওয়ার ৭ টি কারণ জানতে হলে পুরো পোস্টটি একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।

মাসিক

সূচিপত্রঃ

সাধারণত মেয়েদের ২৭ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে যখন তাদের ঋতুস্রাব চলতে থাকে এর চেয়ে যদি অধিক সময় নিয়ে থাকে তাহলে সেটাকে লেট বলে গণনা করা হয়। তাই আমরা আমাদের আজকের পোস্টে মাসিক দেরিতে হওয়ার ৭ টি কারণ বা অনিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়ার কারণ নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি আশা করি আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের মধ্যে আপনারা মাসিক দিয়ে দিতে হওয়ার ৭ টি কারণ এবং অনিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়ার কারণগুলো সুস্পষ্টভাবে জানতে পারবেন।

অনিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়ার কারণ এবং অনিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়ার সমস্য

বন্ধুরা মেয়েদের স্বাভাবিক মাসিকের সময়কালের চেয়ে যখন 8 থেকে 12 দিন দেরিতে মাসিক হয় তখন তাকে অনিয়মিত ঋতুস্রাব বলে বিবেচনা করা হয়। তবে যেকোনো অল্প বয়সী নারীদের অনিয়মিত ঋতুস্রাব এর মত সমস্যা হতে পারে আপনারা আজকে এই পোস্টের পরবর্তী অংশে যে বিষয়টি দেখতে চলেছেন সেটা হল মাসিক দেরিতে হওয়ার ৭ টি কারণ তাহলে আর্জেন্টিনা করে চলুন এবার অনিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়ার কারণ এবং অনিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়ার সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক।

আরো পড়ুনঃ জরায়ু না থাকলে কি মাসিক হয়?

  1. প্রচন্ড মাথা ব্যথা এবং মনের মধ্যে অস্থিরতা অস্থিরতা ভাব উৎপত্তি হতে পারে।
  2. মানসিক দুশ্চিন্তা এবং মেজাজটা খিটখিটে হতে পারে।
  3. নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অধিক সময় ধরে পিরিয়ড বা মাসিক স্থায়ী হতে পারে।
  4. বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ার মত সম্ভাবনা থাকে।
  5. অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের মত সমস্যা বা ঘটনা ঘটতে পারে।
  6. অতিরিক্ত রক্তপাত বা রক্তক্ষরণের মতো সমস্যার দীর্ঘতর হতে পারে এবং এক মাসে রক্তক্ষরণ বেশি এবং অপর মাসে রক্তক্ষরণ কম হতে পারে।

মাসিক দেরিতে হওয়ার ৭ টি কারণ। অনিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়ার কারণ।

যেকোনো বয়সী মেয়েদের ক্ষেত্রে দেখা যায় ২৭ দিন পর পর মাসিক হয়ে থাকে তবে ২০ থেকে ৩৫ টি দিনের পূর্বে বা পরে ২ থেকে ৫ দিন বা ৭ দিন পিরিয়ড স্থায়ীভাবে থাকলে সেটিকে ধরে নিতে হবে অনিয়মিত ঋতুস্রাব বা লেট। তাহলে এবার আপনার যে বিষয়টি জানতে চলেছেন সেটা হল মাসিক দেরিতে হওয়ার সাতটি কারণ বা যে সাতটি কারণে অনিয়মিত ঋতুস্রাব জনিত সমস্যা ঘটে।

  • অতিরিক্ত টেনশন বা দুশ্চিন্তাঃ মাসিক দেরিত হওয়ার অন্যতম একটি বিশেষ কারণ হলো অতিরিক্ত টেনশন বা মানসিক দুশ্চিন্তা ইন একটি কারণ হলো অতিরিক্ত টেনশনের ফলে মানবদেহে হাইপোথ্যালামিক এমেনোরিয়া হতে পারে ফলে হরমোনের স্বাভাবিকতা এবং হরমোনের যে কর্মকাণ্ড গুলি রয়েছে সেগুলো ব্যাহত করে মাসিক দেরিতে হয়।
  • জরায়ুটিউমারঃ অনেক সময় দেখা যায় যে মেয়েদের বা নারীদের জড়াতে টিউমারের মত মারাত্মক ধরনের একটি সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে যা ঋতুস্রাব প্রক্রিয়াকে ভঙ্গুর করে দেয় ফলে অনিয়মিত মাসিকের মতো সমস্যা হয়ে থাকে।
  • শারীরিক অসুস্থতাঃ যেসব নারীদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তারা অতি দ্রুতই অসুস্থ হয়ে পড়ে আর অসুস্থ এবং দুর্বল হলে তাদের শরীরে ঋতুস্রাবের মত ঘটনা দেরিতে হয়।
  • বয়সন্ধিকালঃ বয়সন্ধিকালে সাধারণত নারীদের দেহে এসট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরন হরমোনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে ফলে পিরিয়ড দেরিতে হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এছাড়াও জন্মগত সমস্যার কারণেও পিরিয়ড দেরিতে হয়।
  • অতিরিক্ত ঘোরাঘুরিঃ মেয়েরা সাধারণত নতুন নতুন পরিবেশে নিজেদেরকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার বা মানিয়ে নিতে পারেনা। আপনি যদি অতিরিক্ত ঘোরাঘুরি করতে থাকেন তাহলে আপনার ঋতুচক্রের সময় পরিবর্তন হয়ে মাসিক দেরিতে হয়।
  • থাইরয়েড হরমোনের ভারসামহীনতাঃ থাইরয়েড গ্রন্থি বাই গ্ল্যান্ড আমাদের মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণে রাখার সাথে সাথে দেহের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ কার্যকলাপ গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে থাকে। তাই থাইরয়েড গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থির যেকোনো সমস্যার কারণে অনিয়মিত মাসিক হতে পারে।
  • অধিকারে ওজন বৃদ্ধি পাওয়া বা ওজন গ্রাস পাওয়াঃ মাসিক দিয়ে তো হওয়ার জন্য আবার অন্যতম একটি সমস্যা সেটা হল অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পাওয়া এইটা মাসিক দেরিতে হওয়ার জন্য দায়ী। শরীরের ওজন গ্রাস পাওয়া কিন্তু মাসিক দেরিতে হয়।
  • অতিরিক্ত এক্সারসাইজঃ অতিরিক্ত শারীরিক এক্সারসাইজ বা পরিশ্রমের কারণে কিন্তু মাসিক অনিয়মিত হতে পারে কারণ অতিরিক্ত ব্যায়াম শরীরের এস্ট্রোজেন হরমোনের লেভেল কমিয়ে আনে।
  • পলিস্টিক ওভারি সিনড্রোমঃ এই পলিস্টিক ওভারসিনরোম এটি একটি হরমোন জনিত সমস্যা যখন আমরা অতিরিক্ত জন্ম নিয়ন্ত্রণ করার মত ঔষধ সেবন করে থাকে তখন মূলত এই রোগটি হয়ে থাকে এছাড়াও কিছু জন্মনিয়ন্ত্রণ করন ঔষুধের যে সকল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে সেগুলোর কারণেও কিন্তু এই পলিসটিক ওভারি সিনড্রোম সমস্যা হয় বিশেষ করে যেসব নারীরা জন্মবিরতি পদ্ধতির অনুসরণ করার জন্য ঘন ঘন পিল খেয়ে থাকেন তাদের মাসিকের সমস্যা দেখা দেয়।
  • শারীরিক গঠন পরিবর্তনঃ ক্ষণিকের বংশীয়ভাবে শরীরের আকৃতি বা গঠন পরিবর্তন আনতে পারে ফলে কোন ধরনের নির্দিষ্ট বিশেষ কোনো কারণ ছাড়াই মাসিক দেরিতে হয়ে থাকে।

নিয়মিত মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায়

নিয়মিত মাসিক হওয়াটা কিন্তু মেয়েদের জন্য সুস্থতার আভাস বা লক্ষণ কিন্তু মাসিক যদি দেরিতে হয় বা অধিক সময় ধরে হয় তাহলে কিন্তু শারীরিক অসুবিধা দেখা দিতে পারে। আপনারা উপরে মাসিক দেরিতে হওয়ার সাতটি কারণ সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন এবার নিয়মিত মাসিক হওয়ার ঘরোয়া উপায় গুলো নিয়ে আপনাদেরকে জানাবো তাহলে চলুন এবার জানানো যাক।

আরো পড়ুনঃ  সাদা-স্রাব কি প্রেগনেন্সির লক্ষন জেনে নিন

  1. জন্ম নিয়ন্ত্রণ বা পিল খাওয়া সহ অন্যান্য ঔষদের ব্যবহার আপনাদের জন্য সীমিত আকারে রাখতে হবে।
  2. ভালো খাদ্যাভ্যাস নিয়মিত করতে হবে এবং সকল প্রকার যে সমস্ত জাঙ্ক ফুড, ফাস্টফুড রয়েছে সেগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে সব সময় আপনাকে স্বাস্থ্যকর এবং বেশি প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
  3. প্রতিদিন আপনাকে কমপক্ষে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা ঘুমাতে হবে কেননা ঘুম কম হওয়ার পিছনে কিন্তু মাসিক দিতে হওয়ার মত সমস্যা ঘটে থাকে।
  4. নিয়মিত যোগ ব্যায়াম এবং মেডিটেশন করতে হবে কেননা এগুলো আপনার মানসিক স্ট্রেস কমাতে পারে।
  5. তাছাড়া আপনি প্রতিদিন অ্যালোভেরা কাঁচা পেঁপে কাঁচা হলুদ জিরা দারুচিনি আদা ইত্যাদি খেতে পারেন এগুলো আপনার নিয়মিত মাসিক হওয়ার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  6. আপনাকে মানসিক দিক দিয়ে সুস্থ থাকতে হবে এবং দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে।
  7. সর্বোপরি আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করতে হবে।

অনিয়মিত ঋতুস্রাব বা অনিয়মিত মাসিকের মতো সমস্যা ঘটলে কখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে?

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আশা করি আপনারা উপরে ইতোমধ্যেই মাসিক দেরিতে হওয়ার সাতটি কারণ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন এবার চলুন আমরা আপনাদেরকে জানাতে চলেছি কখন অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা দীর্ঘতর হলে বা কি কি লক্ষণ প্রকাশ পেলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে তা সম্পর্কে জানা যাক।

আরো পড়ুনঃ অনিয়মিত মাসিক কেন হয় জেনে নিন

  • পিরিয়ড বারবার স্থায়ী হলে বা এক সপ্তাহের বেশি থাকলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে
  • হঠাৎ যদি দেখেন যা আপনার মাসিক বা পিরিয়ড বেশি রেগুলার হয়ে পড়ছে তাহলে আপনাকে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে
  • ঋতুচক্র ৩০ থেকে ৩৫ দিনের অধিক হলে।
  • পিরিয়ড যদি ২০ থেকে ২১ দিনের সাইকেল অনুযায়ী হয়।
  • মাসিকের সময় তীব্র ব্যথা এবং রক্তপাতের মত ঘটনা ঘটলে।

মন্তব্যঃ মাসিক দেরিতে হওয়ার ৭ টি কারণ

বন্ধুরা পুরো পোস্টটি আপনারা যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি আপনারা মাসিক দেরিতে হওয়ার ৭ টি কারণ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন অতএব আপনারা যদি অনিয়মিত পিরিয়ড এর বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা পেয়ে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি  আপনাদের বন্ধু বান্ধবের মাঝে শেয়ার করে ফেলুন এবং এই ধরনের স্বাস্থ্য বিষয়ক নিত্য নতুন আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ২০২

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url