১৫টি রাত জাগার কুফল বিস্তারিত জেনে নিন

  

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ, আপনারা অনেকের রাত জেগে বিভিন্ন রকম কাজকর্মে ব্যস্ত থাকে কেউ কেউ আবার মোবাইল ফোন ল্যাপটপ টিভি ইত্যাদি দেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকে কিন্তু এ সকল কাজকর্মগুলো করতে করতে কখন যে আপনার নিজের ক্ষতি করে ফেলেছেন আপনি নিজেই জানেন না। তাই আর দেরি না করে চলুন রাত জাগার ১৫ টি কুফল সম্পর্কে জেনে আসি। এই পোস্টটি স্কিপ না করে পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

রাত জাগলে কি কি ক্ষতি হয়? এবং রাত জাগার ১৫টি কুফল জেনে নিন।

  • হাই ব্লাড প্রেসারঃ অনেকগুলো গবেষণাই দেখা গিয়েছে যে যদি কোন ব্যক্তি দুই থেকে চার দিন ঠিক মত না ঘুমায় তাহলে তার শরীরের ভেতরে এমন কিছু পরিবর্তন ঘটে যা তার দেহের ব্লাড প্রেসার কে বাড়াতে সাহায্য করে। এবং এমতাবস্থায় যদি ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তাহলে শরীরের উপর ব্যাপকভাবে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে এবং মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
  • মানসিক রোগঃ অনেক ব্যক্তি আছেন যারা রাতে ঠিকমত ঘুমায় না তাদের মধ্যে মানসিক বিষন্নতা, অস্থিরতা, বিরক্তি ইত্যাদি সহ নানাবিধ সমস্যার প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। আর ইতোমধ্যে যে সকল ব্যক্তি এই রোগে ভুগছেন তাদের তো প্রতিদিনের জন্য ঘুমের ওষুধের বেশ-প্রয়োগ চলছে।
  • ওজন বেড়ে যাওয়াঃ বেশি রাত জেগে থাকলে শরীরের মধ্যে তৈরি হওয়া কর্টিসেল হরমোন নিঃসরণ বেড়ে যায় যা দেহের মধ্যে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ক্ষুধা নিবারণকারী লেপটিনের মাত্রা কমে যায় এবং ক্ষুধা বাড়ানো গ্রেলিনের বেড়ে যায়। এবং শরীরে দীর্ঘমেয়াদী ওজন বাড়তে থাকে। 
  • আবার কোন এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে ব্যক্তি কমপক্ষে 6 ঘন্টার কম সময়ে ঘুমালে শরীরের দীর্ঘমেয়াদে ওজন বাড়ার আশঙ্কা ৩০% হয়ে থাকে। এবং বেশি রাত জেগে ঘুমালে দেহের মধ্যে ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক, কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপ সহ বিভিন্ন রোগের বাসা বাঁধতে থাকে।
  • আয়ু কমে যাওয়াঃ কোনা সমীক্ষায় ব্রিটিশ ছাত্রদের ওপর করা এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সব ব্যক্তি 6 ঘণ্টার কম সময় ঘুমিয়েছে তাদের হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখা গিয়েছে। কেননা ঘুমের সঙ্গে শরীরের হার্টের সরাসরি সংযোগ রয়েছে যদি শরীরে ঘুম কম হয় তাহলে শরীরে এই দুইটি প্রধান অঙ্গ দুর্বল হয়ে যায়। এবং তার থেকেই সরাসরি মৃত্যু অনিবার্য হতে থাকে।
  • ক্লান্তিবোধঃ দিনের পর দিন যদি আপনি আপনার ঘুমের চাহিদার তুলনায় আপনি অধিক কম ঘুমান তাহলে আপনার দেহে বা মস্তিষ্কের মধ্যে ফিল গুল হরমোনের ক্ষরণ কমে যেতে থাকে এবং আস্তে আস্তে আপনি ডিপ্রেশন সহ নানা বিদ সমস্যায় ভুগতে থাকেন আবার আপনি যদি বেশি রাত জেগে থাকে তাহলে পরের দিন আপনার কর্মস্থলে কাজের প্রতি Boaring ফিল হবে। তাই নিয়মিত ঘুমাবার চেষ্টা করুন।
  • সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কমে যাওয়াঃ একাধিকবার কেস স্টাডিতে দেখা গেছে যে সকল ব্যক্তি দিনের পর দিন মাসের পর মাস ঠিকমতো ঘুমায় না অধিক রাত জেগে থাকে আস্তে আস্তে তাদের মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশগুলো ঠিকমতো কাজ করতে পারেনা ঠিক তখনই যে কোন বিষয়ের উপর সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা কমে যায়।
  • ত্বকের সৌন্দর্য গ্রাস পাওয়াঃ দিনের পর দিন রাতের পর রাত ঠিকমতো না ঘুমানোর কারণে নিজের মধ্যে কর্টিজল স্ট্রেস ক্ষরণ বেড়ে যায়। যার ফলে মন মেজাজ খিটমিটে হয়ে থাকে। এবং আস্তে আস্তে ত্বকের আদ্রতা গ্রাস পেতে শুরু করে।
  • হার্টের সমস্যাঃ যদি কোন ব্যক্তি নিয়মিত ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা না ঘুমায় তাহলে তার হার্ট ফেলিওর সহ ইরেগুলার হার্টবিট সহ নানাবিধ সমস্যা হতে থাকে। কেননা মস্তিষ্কের সাথে হার্টের সরাসরি সংযোগ রয়েছে। তাই নিয়মিত না ঘুমালে হার্টবিটের আশঙ্কা বেড়ে যায় এবং এর থেকে হার্ট অ্যাটাক শুরু হয়ে যায়।
  • স্মৃতি বা মেমোরির লোপ পাওয়াঃ অধিকন্তু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে সকল ব্যক্তি দিনের পর দিন রাত জেগে পড়াশোনা করে এবং ঘুম কম হয় বিশেষ সকল ব্যক্তি মানসিক অবসাদে ভোগে এবং সারাদিন যে সকল কিছু শিখিয়ে তারা তার মেমোরিতে বা স্মৃতিতে বেশিক্ষণ ধারণ করতে পারে না। 
  • তাই বিশেষজ্ঞগন অধিক রাত জেগে পড়াশোনা করতে নিষেধ করেছেন। আবার একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে যে সকল ব্যক্তি রাত জেগে পড়াশোনা করে তাদের তুলনায় যে সকল ব্যক্তি স্বাভাবিক ঘুমিয়ে পড়াশোনা করে তাদের পারফরমেন্স ভালো হয়।
  • ডায়াবেটিসঃ জাপানের গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সকল শ্রমিক রাত জেগে কাজ করে তাদের মধ্যে ডায়াবেটিসের প্রাদুর ভাব দিনে কাজ করা  শ্রমিকদের চাইতে ৫০% বেশি হয়ে থাকে।
  • ব্রেস্ট ক্যান্সারঃ মার্কিন এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে যেসব নারী শ্রমিক রাত জেগে কাজ করে তাদের স্তন ও ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি দিনের বেলা কাজ করার শ্রমিকের চাইতে 34 থেকে 49% বেশি হয়ে থাকে।
  • পেটের সমস্যাঃ যে সকল ব্যক্তি বেশি রাত জাগেন তাদের গ্যাস্ট্রিকসহ ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়।
  • রিপ্রোডাকশন ও সেক্সঃ রাত জাগা মহিলাদের অনিয়মিত মসিকের সমস্যা ওকালে সন্তান প্রসব এবং কোন কোন ক্ষেত্রে সন্তান না হওয়ার মত সমস্যাও দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে সকল নারী-পুরুষ রাত জেগে বিভিন্ন কাজকর্ম করে থাকে তাদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বকতা সৃষ্টি হতে পারে এবং তাদের যৌনকাঙ্খাও কমে যেতে পারে।
  • ডার্ক সার্কেলঃ যে সকল ব্যক্তি রাত জেগে থাকেন তাদের অতিরিক্ত রাত জাগার ফলে চোখের নিচ দিয়ে কালো ছোপ ছোপ দাগ দেখা দেয়। আবার কারো চোখে নিচে ফুলে ওঠে।
  • ব্রনের সমস্যাঃ যে সকল নারী পুরুষ রাত জেগে থাকে তাদের অতিরিক্ত রাত জাগার ফলে চোখের নিচ দিয়ে তো ডার্ক সার্কেল দেখা দেয় এবং চেহারার উপর ব্রনের আবির্ভাব ঘটে একটি মানবদেহে যে পরিমাণ ভিটামিন থাকে রাত জাগার ফলে সেই ভিটামিন গুলো নষ্ট হয়ে যায় এবং চেহারার উপর ব্রণ দেখা দেয়।

শেষ কথাঃ রাত জাগার ১৫টি কুফল

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আপনাদের সামনে রাত জাগার ১৫টি কুফল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছে আশা করি এ পুরো পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হবেন। এবং যারা প্রতিনিয়ত রাত জেগে থাকেন বা মোবাইল টিভি ল্যাপটপ ইত্যাদি এসবের সঙ্গে বেশি সময় দিয়ে থাকেন তারা আর বেশি সময় দিবেন না কেননা এগুলো আপনার মৃত্যুর ঝুঁকি দাঁড়াতে পারে। পোস্ট আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অন্যদের মাঝে শেয়ার করে দিন এবং আমার ওয়েব সাইটে সাবস্ক্রাইব করে আমাকে আরো এমন পোস্ট লিখতে উৎসাহিত করুন। আমার এই পোস্টটি মনোযোগ সহকার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url