ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ ও তার প্রতিকার

 

গ্রীষ্মের এই অসহ্যনীয় গরমে আমরা প্রায় অনেকেই অতিষ্ঠ হয়ে গেছি আবার অসহ্যনীয় গরমে অতিষ্ঠ হওয়ার  পাশাপাশি আমরা অনেকে অসুস্থও হচ্ছি। সাধারণত আমরা বেশিরভাগ মানুষই ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছি। প্রতিনিয়ত গ্রীষ্মের তাপদাহ গরমের কারণে প্রতিনিয়ত  ডায়রিয়া ও আমাশয় জনিত রোগের দেখা দিচ্ছে। 

এই রোগটি মূলত দূষিত পানি ও অস্বাস্থ্যকর খাবার এর কারণে ঘটছে। তাহলে আপনাকে ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ ও তার প্রতিকার সম্পর্কে জানতে হলে এই পোস্টটি আপনাকে মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। এবার চলুন ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ ও তার প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা শুরু করা যাক।

ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ

পোস্ট সূচিপত্রঃ  এক নজরে দেখে নিন

ডায়রিয়া কিঃ

ডায়রিয়া হলো এমন একটি রোগ যা পানির মতো বারবার পাতলা পায়খানা হওয়া সাধারণত 24 ঘন্টার মধ্যে ৩ থেকে ৪ বার বা তারও বেশি বার যদি অপনার পাতলা পায়খানা হয় তাহলে আমরা সেটিকে ডায়রিয়া বলে থাকি। 

আরো পড়ুনঃ জ্বর সর্দি কাশি থেকে মুক্তি পাওয়ার ঘরোয়া উপায়

যদি তিন বার বা তার থেকে কম হয় তাহলে ভয়ের কোন কারণ নেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রতি বছর পাঁচ থেকে ছয় বছরের কম বয়সী প্রায় ১৭০ কোটি শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয় এরমধ্যে প্রতিবছর প্রায় ৫ লক্ষ ২০হাজার শিশুর প্রাণ কেড়ে নেয় এই ঘাতক ব্যাধি। 

ডায়রিয়ার কারণে শিশুরা অপুষ্টি রোগে ভোগে সারা বিশ্বে প্রায় ৭৭ কোটি মানুষ সুপেয় পানি পান করতে পারে না এবং প্রায় ২৫২ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার করতে পারেনা। আবার কোন এক গবেষণায় দেখা গেছে যে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে ২ থেকে ৩ বছর বয়সী শিশুরা বছরে প্রায় 3 থেকে 4 বার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়।

ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ

ডায়রিয়া হলো একটি মারাত্মক ব্যাধি। তাই এ রোগটি আমাদের দেহে বাসা বাধার আগে এর বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে তো সেই লক্ষণগুলো কি আমরা এই পোস্ট এর মধ্যে আলোচনা করব তাহলে চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

  • ডায়রিয়া হলে সাধারণত যখন তখন আপনার মধ্যে পায়খানার চাপ দেয়
  • পায়খানা লাগলে দ্রুত টয়লেটে যেতে হয় নইলে আপনার অপেক্ষা করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা
  • তোমার পেট কামড়ানো বা ব্যথা অনুভূত হওয়া
  • সব সময় বমি বমি ভাব থাকা এবং অনেক সময় বমি না হওয়া
  • শরীর দুর্বল হয়ে পড়া

আরো পড়ুনঃ ঠান্ডায় সর্দি জ্বর থেকে মুক্তি পাওয়ার ঘরোয়া উপায়

আপনার দেহে অন্যান্য অসুখের উপস্থিতি থাকলে এবং সেটির কারণে ডায়রিয়া হলে আরো বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছেঃ

  • আপনার পায়খানার সাথে রক্ত পড়া
  • জ্বর এবং ঠান্ডা লেগে যাওয়া
  • হালকা মাথা ব্যথা বা মাথা ঘোরা ভাব থাকা
  • অধিকাংশ সময় বমি হওয়া বা বমি-বমি ভাব থাকা

শিশুর ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ

সাধারণত শিশুর ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হলে তারা আর ঠিক থাকতে পারে না । এমনকি তারা শুধু কাঁদতে থাকে । কিন্তু আমরা মনে করি যে তারা হয়তো বা এমনি কাঁদছে কিন্তু না তারা ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে  আমরা তা বুঝতে পারিনা তাহলে শিশুদের ডায়রিয়া হলে যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় তা নিচে দেয়া হলঃ

  • শিশুরা ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হলে তাদের ঘনঘন পানির পিপাসা পাবে
  • শিশুরা যে পরিমাণে প্রস্রাব করে সেই পরিমাণে প্রস্রাব না হওয়া এবং একটানা 2 থেকে 3 ঘন্টা বা তারও বেশি সময় ধরে প্রস্রাব না হওয়া
  • শিশুদের ডায়রিয়া হলে নিস্তেজ হয়ে পড়া
  • বুকের দুধ টেনে খেতে না পারা
  • শিশুর চেহারা শুষ্ক দেখানো
  • শিশুর ত্বকের কার্যক্ষমতা কুঁচকে যাওয়া
  • শিশু যখন কান্না করে তখন তার চোখে পানি না থাকা
  • বারবার বমি করা

শিশুদের ডায়রিয়া রোগ থেকে বাঁচতে করণীয়ঃ

এতক্ষণ আমরা শিশুর ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ সম্পর্কে জানলাম এবার আমরা শিশুর ডায়রিয়া রোগ থেকে বাঁচতে হলে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত তা নিয়ে আলোচনা করব। তাহলে চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

  • ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত শিশুর শরীর থেকে যে পরিমাণ পানি বের হয়ে যায় তাতে শিশুর পানিশূন্য হওয়ার ঝুঁকি থাকে। হলে শিশুকে বারবার যে সকল তরল খাবার দিতে হবে তা হলঃ ডাবের পানি, চিড়ার পানি, লবণ ও গুড়ের শরবত ইত্যাদি বেশি করে খাওয়ানো উচিত।
  • শিশুকে খাবার দেওয়ার পাশাপাশি তাকে খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে শিশুকে ওরস্যালাইন খাওয়ার পরিমাণ হচ্ছে প্রতিবাদ পাতলা পায়খানা হওয়ার পর দুই বছর বা তার কম বয়সী শিশুর জন্য 50 থেকে 100 মিলি, এবং 2 থেকে 10 বছর বয়সী শিশুর জন্য 100 থেকে 200 মিলি এবং দশ বছর বয়সের বেশি বয়সীদের জন্য নির্দেশ অনুযায়ী খাওয়াতে হবে।
  • যে সকল শিশু মায়ের বুকের দুধ খায় তাদেরকে বারবার বুকের দুধ খাওয়ানো
  • শিশু যদি বমি করতে থাকে তাহলে তাকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আবার খাওয়াতে হবে
  • এবং তাজা ফলের রস দিলে শিশুর দেহে পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ হবে
  • ডায়রিয়া ভালো হয়ে গেলেও শিশুকে পরবর্তী দুই সপ্তাহ পর্যন্ত এরকমভাবে খাওয়াতে হবে
  • বিশেষ করে শিশুকে চিকিৎসকের বিনা পরামর্শে কোন প্রকার অ্যান্টিবায়োটিক অন্য কোন ওষুধ শিশুকে খাওয়ানো যাবে না কেননা এতে আপনার শিশুর জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে।

ডায়রিয়া কেন হয়?

ডায়রিয়া হওয়ার জন্য মূলত যে কারণগুলো দায়ী তা হল দূষিত খাবার। আমরা সাধারণত সকলেই বাইরের খাবার খেয়ে থাকি এমনকি আমরা পিজ্জা, বার্গার, ফুচকা, চটপটি ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের মজা সুলভ বাইরের খাবার খেয়ে থাকি। 

এতে আমরা জানি না যে আমাদের শরীরের ক্ষতি হয় বাইরের খাবার গুলোতে আমাদের শরীরের মধ্যে প্রথমে পেট ব্যথা দেখা দেয় এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয় মূলত এই সমস্ত কারণগুলো থেকেই আমাদের ডায়রিয়া হয়। 

আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে কি খাওয়ানো উচিত বা উচিত নয় জেনে নিন

আবার দূষিত পানি আমরা কোথাও বেড়াতে গেলে বেড়াতে গেলে সেখানে বিশুদ্ধ পানি পায় না অনেকাংশে আমাদেরকে টিউবওয়েলের বা ট্যাপ কল এর পানি খেতে হয় সেখানে বিভিন্ন রকমের আর্সেনিক যুক্ত থাকে মূলত এ কারণেই ডায়রিয়া হয়। 

আবার রোগজীবাণু থেকেও আমাদের ডায়রিয়া হয় যেমন আমরা কোথাও খেলাধুলা করি তারপরে অনেক সময় দেখা যায় যে আমরা  খাবার জাতীয় কোন কিছু  আমাদের খেতে ইচ্ছা করে এবং তখন আমরা হাত না ধুয়েই সেটি খেয়ে ফেলি এতে আমাদের হাতে থাকা জীবাণু গুলো আমাদের পেটের মধ্যে যায় এবং সেখান থেকে আমাদের পেট ব্যথা এবং ডায়রিয়া শুরু হয়।

ডায়রিয়া রোগের চিকিৎসা / পাতলা পায়খানা হলে কি ঔষধ / ডায়রিয়া হলে কি ঔষধ / পাতলা পায়খানার ঔষধ

ডায়রিয়া হলে আপনাকে প্রথম যে কাজটি করতে হবে তাহলো আপনাকে স্যালাইন খেতে হবে। কেননা আপনি যদি স্যালাইন না খান তাহলে আপনার দেহের যে পরিমাণ পানি ও লবণ আপনার শরীর থেকে বেরিয়ে যায় তা পূরণ হবে না। তাই আপনাকে খুব ভালভাবে খেয়াল রাখতে হবে আপনার ডায়রিয়া হলে শরীরে যেন পানিশূন্যতা না হয়ে যায় এই কারণে আপনাকে খাবার স্যালাইন গ্রহণ করতে হবে। 

যদি আপনার শরীরে পানি শূন্যতা হয়ে যায় তাহলে আপনার মৃত্যুর ঝুঁকি থাকতে পারে। তাই আপনার ডায়রিয়া হলে যত পারেন আপনাকে খাবার স্যালাইন গ্রহণ করতে হবে।

বাজারে প্রচলিত কিছু ডায়রিয়ার সাধারণ ঔষধঃ

  • Metril
  • metro
  • flazil
  • Metronidazole
  • Amodis

বাজারে প্রচলিত কিছু ডায়রিয়ার অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধঃ

  • Ciprofloxacin
  • Azithromycin

[বিদ্রঃ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করুন]

উপরিউক্ত ঔষধগুলো আপনার সব সময় খাওয়া উচিত নয় কেননা এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে আপনাকে প্রথমে খাবার স্যালাইন গ্রহণ করতে হবে এবং স্যালাইন খাওয়ার পরে যদি আপনার ডায়রিয়া না কমে তখন আপনাকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং অযথা ঐসকল ওষুধ আপনাকে অতি দ্রুত খাবার প্রয়োজন নেই। 

ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত / কি খেলে পাতলা পায়খানা বন্ধ হয়?

ডায়রিয়া আমাদের মূলত যে সমস্ত খাবারগুলো খাওয়া উচিত তারমধ্যে প্রথমত হল খাবার স্যালাইন, কেননা খাবার স্যালাইন খেলে আমাদের শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়া পানি ও লবণ জাতীয় খনিজ পদার্থ বেরিয়ে যায় তা পূরণ হতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ কাঁঠালের বিচি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন 

এবং সেইসাথে আপনী ডাবের পানি,ভাতের মাড় ইত্যাদি এগুলো খেতে পারেন আবার আপনি বেশি বেশি পরিমাণে সাধারণ পানিও খেতে পারেন। আবার দই ও খেতে পারেন কেননা এর মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া আপনার শরীরে পাতলা পায়খানা রোধে সাহায্যকারী ভূমিকা রাখে। 

কলা যেমন কলা আমাদের শরীরের পানির ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে আবার পেটের বিভিন্ন রকমের খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে আবার পেটের ব্যাথা দূর করতেও সাহায্য করে। আবার পানির পাশাপাশি আপনি ডালিম, কমলা এবং তরমুজের জুস ইত্যাদি আপনার শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে এবং পেট ঠান্ডা রাখে।

ডায়রিয়া হলে কি কি খাওয়া যাবে না

আমরা অনেকেই জানি না যে তাহলে আমরা কোন খাবারগুলো আমাদের জন্য উচিত নয় আজকে আমরা সেই সকল বিষয়গুলো নেই আলোচনা করব তাহলে চলুন এই পোস্টের মধ্যে আলোচনা শুরু করা যাক।

লাইব্রেরি অফ মেডিসিন এর তথ্য মতে, ডায়রিয়া রোগীদের ভাজা কোন খাবার খাওয়া উচিত নয় কেননা ভাজা খাবার আপনার পেটের মধ্যে আরও জানা পড়া শুরু করে দেয় এবং আপনার পেটে আরো পাতলা পায়খানার চাপ দেয় যেমনঃ আপনি গরুর মাংস খেতে পারবেন তবুও ঝোল করে আবার মুরগির মাংস খেতে পারবেন ঠিক একইভাবে। 

আরো পড়ুনঃ লেবু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

কিন্তু হ্যাঁ আপনাকে মনে রাখতে হবে যে সেই খাবারটি যেন তেলেভাজা না হয়। কেননা তেলে ভাজা খাবার ডায়রিয়া রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আবার দুধের তৈরি যেসকল খামারগুলো সেগুলো খাওয়া যাবে না। যেমনঃ দুধের তৈরি পিঠা, দুধের তৈরি রসগোল্লা, মিষ্টির ছানা, দুধের আইসক্রিম ও দধি সহ যে সকল খাদ্য দুধ দিয়ে তৈরি হয়। আপনার ডায়রিয়া হওয়া অবস্থায় এসকল খাবারগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে। 

আবার আমেরিকার এক তথ্য মতে বলা হয়েছে যে ডায়রিয়া রোগীকে অ্যালকোহল ও ক্যাফেইনযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। কেননা আপনি যদি ডায়রিয়া অবস্থায় এই সকল খাবারগুলো খাওয়া তাহলে সুস্থ হতে অনেক ধকল পোহাতে হবে। 

আবার যেসকল ফল বা সবজি খেলে গ্যাস্ট্রিক হওয়ার আশঙ্কা থাকে সেই সমস্ত ফল বা সবজি হতে বিরত থাকা যেমনঃ মটরশুটি বা মোটর, ব্রোকলি,কর্ন, বা মিষ্টিজাতীয় খাবার এই সমস্ত খাবার গুলো আপনার অন্ত্রের গ্যাস বাড়িয়ে দিতে পারে এবং ডায়রিয়া রোগীর জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

ডায়রিয়া কত প্রকার?

ডায়রিয়া সাধারণত তিন প্রকারের হয়ে থাকে যথাঃ

  • Acute watery diaries (একিউট ওয়াটারি ডায়রিয়া)
  • Persistent diaries(পারসিসটেন্ট ডায়রিয়া)
  • Dysentery (ডিসেন্ট্রি)

    Acute watery diaries (একিউট ওয়াটারি ডায়রিয়া): 

    পাতলা পায়খানা 14 দিনের কম স্থায়ী হয় এটাকে একিউট ওয়াটারি ডায়রিয়া বলে এবং পায়খানার সাথে রক্ত আসলেও এটি বিপদজনক নয়।

    Persistent diaries(পারসিসটেন্ট ডায়রিয়া):

      পাতলা পায়খানা 14 দিনের বেশি স্থায়ী হয় তাই হলো পারসিসটেন্ট ডায়রিয়া এবং ডায়রিয়া রোগীদের জন্য এটি বিপদজনক হতে পারে।

      Dysentery (ডিসেন্ট্রি):  

      যে সমস্ত পায়খানার সাথে রক্ত মিশ্রিত অবস্থায় থাকে ডিসেন্ট্রি ডায়রিয়া যা এটি বিপদজনক।

      ডায়রিয়া রোগের জীবাণুর নাম কি?

      • বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া যেমন সালমোনেলা, সিগেলা, ব্যাসিলাস, ইশ্চেরিয়, কোলাই, ভিব্রিও, ইত্যাদি।
      • আবার কেউ কেউ রোটা ভাইরাস বা হেপাটাইটিস এ ধরনের ভাইরাস বলে থাকে
      • প্রোটোজোয়া গঠিত ডায়রিয়া জিয়ারডিয়া, এন্টামিবা জাতীয় প্রোটোজোয়া ডায়রিয়ার জন্য দায়ী

      ডায়রিয়া ও বমি হলে করণীয় / বড়দের ডায়রিয়া হলে করণীয় কি?

      আপনাদের যদি ডায়রিয়ার সাথে বমিও হয় তাহলে আপনাকে যে কাজগুলো করতে হবে তা হল  বাড়িতে থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেবেন, প্রচুর পরিমাণে তরল পানী ও খাবার খাবেন। যেমন প্রচুর পরিমাণে পানি, খাবার স্যালাইন, চিড়ার পানি, ভাতের মাড় কিংবা ডাবের পানি আবার ভাতের মাড়ে সামান্য লবণ দিতে পারেন। 

      এবং তা ছোট ছোট চুমুকে খাওয়ার চেষ্টা করবেন এছাড়া বাজার থেকে কেনা ফলের জুস, কোমল পানীয়, ক্যাফেইনযুক্ত চা, চিনিযুক্ত চা ইত্যাদি পরিহার করবেন কারন এইসব আপনার ডায়রিয়া ও বমি ভাব আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

      ডায়রিয়া হলে ডিম খাওয়া যাবে কি?

      যদি আপনাদের ডায়রিয়া হয় তাহলে আপনারা অনেকে হয়তো বা চিন্তিত হয়ে পড়েন যে ডায়রিয়া হলে কি ডিম খাওয়া যাবে না যাবে না। আসলে আপনাদের যদি ডায়রিয়া হয় তাহলে আপনাকে ডায়রিয়া ওষুধ খেতে হবে এবং যদি তার সাথে বমিও হয় তাহলে আপনাদেরকে বমির ওষুধ খেতে হবে। 

      আরো পড়ুনঃ ঘি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত

      সুতরাং ডায়রিয়ার সাথে ডিমের কোন সম্পর্ক নেই তাই আপনারা নির্দ্বিধায় ডিম খেতে পারেন ডিম হল একটি সুষম খাদ্য আমাদের শরীরে প্রোটিন যুক্ত করতে সাহায্য করে এবং যখন আপনারা ডায়রিয়া রোগে ভোগেন তখন আপনাদের ডিম খাওয়া উচিত। 

      কেননা ডিম খেলে আপনাদের শরীরের পাতলা পায়খানা করতে করতে আপনাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে সে দুর্বলতাকে দূর করতেও সাহায্য করে কিন্তু আপনাকে ডিম খাওয়ার পাশাপাশি খাবার স্যালাইন ঔষধ ইত্যাদি আপনাকে খেতে হবে।

      ডায়রিয়া হলে কি দই খাওয়া যাবে কি?

      ডায়রিয়া হলেও আপনি দই খেতে পারবেবন কিন্তু আপনাকে কোন দই  খেতে হবে তা হয়তো বা জানেন না আপনাকে ডায়রিয়া হলে যে দইটি খাওয়া উচিত তা হল টক দই কেননা বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের মতে টক দই এ থাকা প্রোবায়োটিক আপনার পাতলা পায়খানা বন্ধ করতে সাহায্য করে। 

      কিন্তু আবার আপনাকে টক দই একেবারে বেশি খাওয়া যাবেনা। কিছুক্ষণ পর পর অল্প অল্প পরিমাণে আপনি টক দই খেতে পারেন। যদি একেবারে আপনি টক দই বেশি খেয়ে ফেলেন তাহলে ডায়রিয়া বন্ধ হওয়া ব্যতীত তার প্রকোপ আপনার ওপর আরও বেড়ে যেতে পারে তাই আপনাকে দই খাওয়ার দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। 

      ডায়রিয়া হলে আনারস খাওয়া যাবে কি?

      ডায়রিয়া হলে আপনি আনারস খেতে পারেন কিন্তু হ্যাঁ আপনাকে আনারস খাওয়ার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে আনারসে রয়েছে ভিটামিন সি তাই আপনাকে আনারস ডায়রিয়া হলে অল্প পরিমাণে খেতে হবে। 

      যদি আপনি লোভনীয় পর্যায়ে চলে যান এবং একটি জায়গায় যদি আপনি অনেকগুলো আনারস খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার ডায়রিয়ার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে যেমন আনারস অতিরিক্ত খেয়ে ফেললে আপনার যেগুলো হবে তা হল। 

      প্রথমত আপনার ডায়রিয়া, এসিডিটি, পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি হতে পারে তাই আপনার স্বাস্থ্যের দিক বিবেচনা করে  আপনাকে আনারস খেতে হবে।

      ডায়রিয়া হলে আপেল খাওয়া যাবে কি?

      বিভিন্ন ডাক্তারের পরামর্শে তারা বলে থাকেন যে যদি কোন ব্যক্তি দৈনিক একটি করে আপেল খেয়ে থাকে তাহলে তারার ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন হয় না কেননা আপেল আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে কাজ করে থাকে। ঠিক তেমনি আবার আপেল খেলে আমাদের ডায়রিয়া রোগের প্রবণতা কমাতেও সাহায্য করে তাই আমরা অতি সহজে বলতে পারি যে ডায়রিয়া হলেও আপেল খাওয়া যায়।

      পাতলা পায়খানা হলে পাকা কলা খাওয়া যাবে কি?

      কলার স্বাস্থ্য উপকারিতা আমাদের সকলেরই জানা আছে। কলাতে প্রচুর ফাইবার রয়েছে এমনকি এতে থাকা একই সঙ্গে বিভিন্ন পুষ্টি ও খনিজ পদার্থ থাকে যা আমাদের শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। তাই কলা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী একটি ফল। আবার এটি শুধু শিশুদের জন্য নয় বরং বড়দের জন্য কার্যকরী তাই পাতলা পায়খানা হলে ও কলা খাওয়া উচিত।।

      পাতলা পায়খানা হলে গরুর মাংস খাওয়া যাবে কি?

      পাতলা পায়খানা হলে গরুর মাংসটা আপনার জন্য বন্ধ রাখাটাই শ্রেয়। কিন্তু আপনার যদি গরুর মাংস খেতে ইচ্ছা হয় তাহলে আপনি সেটি ঝোল করে খেতে পারেন। যদি আপনার গরুর মাংস ঝোল করে খেতে করে  ভালো না লাগে তাহলে আপনি বরঞ্চ আপনার ডায়রিয়া রোগ চলাকালীন আপনার গরুর মাংস খাওয়া টি বন্ধ রাখুন। 

      আরো পড়ুনঃ ১৫ টি দেশি ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

      আবার আপনাকে গরুর মাংস অতি মসলাযুক্ত বা তেলে ভাজা খাওয়া যাবেনা কেননা বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিধরা বলেছেন যদি আপনার ডায়রিয়া হয় আপনি সেই অবস্থাতেই গরুর মাংস অতি মসলাযুক্ত খান তাহলে আপনার পেটের সমস্যা আরো বাড়িয়ে দিয়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি করতে পারে। 

      গরুর মাংস রান্নার দিকে আপনাকে বেশি মসলা এবং বেশি তেল খাওয়া যাবেনা। পরিশেষে বলতে পারি পাতলা পায়খানা অবস্থাতেও খাওয়া যাবে কিন্তু সেটা ঝোল করে খেতে হবে আবার অতি মসলাযুক্ত অতী তেল যুক্ত হওয়া যাবে না।

      সর্বশেষ কথাঃ

      সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ, আপনারা ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ ও তার প্রতিকার এই পোস্টটি পড়ে অবশ্যই উপকৃত হবেন। আমরা এই পোষ্টের মধ্যে আপনার অনেক কিছু না জানা অজানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি যোগী এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনাদের বিভিন্ন বন্ধু-বান্ধবের মাঝে এই পোস্টটি শেয়ার করে দিতে পারেন। 

      এবং এমন আরো নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমার এই ওয়েবসাইটির পাশে থাকুন। সুতরাং আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আমার এই পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ যদি এই পোস্ট বিষয়ক আরো কোন তথ্য আপনার জানা থাকে বা আমাকে জানানোর থাকে তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে গিয়ে আমাকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।


      এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

      পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
      এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
      মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

      বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

      comment url