Megenoxমেজেনক্স এর কাজ কি

সুপ্রিয় পাঠক বিন্দু আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহু। আশা করি সবাই ভাল আছেন আজকে আমরা এই পোস্টটিতে একটি স্বনামধন্য  ACMI কোম্পানির ঔষধ নিয়ে আলোচনা করব। ঔষধটির নাম হচ্ছে Megenox মেজেনক্স। এর কাজ কি, গুণাবলী , কোন কোন রোগে ব্যবহার করা হয়, এর মূল উপাদান, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি সম্পর্কে আজকে আমরা জানবো। তবে চলুন দেই না করে মেজেনক্স Megenox এর কাজ কি তা জেনে নেই।



উপাদান

প্রতি মি.লি. সাসপেনশনে রয়েছে ৪০ মি.গ্রা. মেজেস্ট্রল এসিটেট ইউএসপি।

ফার্মাকোলজি

মেজেস্ট্রল এসিটেট একটি কৃত্রিম উপায়ে তৈরী প্রাকৃতিক প্রজেসটেরন হরমোনের অনুরূপ। বিভিন্ন পরীক্ষায় মেজেস্ট্রল এসিটেটের ক্ষুধা বাড়ানোর প্রমাণ এবং ক্যাকেক্সিয়াতে ব্যবহারের তথ্য রয়েছে। তবে, ক্ষুদামন্দা এবং ক্যাকেক্সিয়াতে মেজেস্ট্রল এসিটেটের সুনির্দিষ্ট কার্যপদ্ধতি এখনও অজানা কিন্তু কিছু পরীক্ষায় দেখা যায় শরীরের কিছু প্রো-ইনফ্লামেটরী সাইটোকাইনস যেমন IL1, IL6, TNF এর সাথে বিভিন্ন পুষ্টির প্যারামিটার, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও ওজন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিপরীত ধর্মী সম্পর্ক রয়েছে।

ফার্মাকোকাইনেটিক

রক্তরসে মেজেস্ট্রল এসিটেটের মাত্রা নির্ভর করে পরিমাপক মাত্রা ব্যবহারের উপর এবং যকৃত বা অস্ত্রে এই ঔষধের নিষ্ক্রিয়তার উপর। ঔষধের নিষ্ক্রিয়তা কিছু কারণে প্রভাবিত হতে পারে, যেমন- অন্ত্রনালীর নিজস্ব গতি, অস্ত্রে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি, দৈহিক ওজন, খাদ্যাভ্যাস এবং যকৃতের কার্যক্ষমতা। প্রধান নির্গমনের পথ হচ্ছে মূত্র। একজন সুস্থ ব্যক্তির মেজেস্ট্রল এসিটেট এর নির্গমনের হাফ-লাইফ হল ২০-৫০ ঘন্টা।

নির্দেশনা

মেজেস্ট্রল ওরাল সাসপেনশন ক্ষুধামন্দা এবং ক্যাকেক্সিয়া অথবা জটিল কোন রোগের কারণে লক্ষণীয় মাত্রায় ওজন কমে যাওয়া রোগীদের চিকিৎসায় নির্দেশিত।

মাত্রা ও সেবনবিধি

প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের জন্য মেজেস্ট্রল ওরাল সাসপেনশনের প্রস্তাবিত প্রাথমিক নির্দেশিত মাত্রা দৈনিক ৮০০ মি.গ্রা. অথবা ২০ মি.লি.।

প্রয়োগের পথ:    মুখে সেব্য।

প্রতিনির্দেশনা

মেজেস্ট্রল এসিটেট অথবা ঔষধের সক্রিয় উপাদানের প্রতি অতিসংবেদনশীলতা - গর্ভাবস্থা অথবা গর্ভাবস্থা সন্দেহ হলে

সাবধানতা ও সতর্কতা

ওজন হ্রাসের নিরাময়যোগ্য চিকিৎসা সনাক্তকরণ ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে মেজেস্ট্রল এসিটেট ব্যবহার করা উচিত। কারণ সমূহের মধ্যে রয়েছে সম্ভাব্য ক্যান্সার, সিস্টেমিক সংক্রমণ, অন্ত্রনালীর রোগে শোষণ ক্ষমতা হ্রাস, এন্ড্রোক্রাইন জনিত রোগ অথবা মানসিক অসুখ। এইচআইভি ভাইরাসের প্রতিলিপির উপর মেজেস্ট্রল এসিটেটের প্রভাব এখনও অনির্ধারিত। থ্রম্বোএম্বলিক রোগের পূর্ব ইতিহাস থাকা রোগীদের জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

ডায়াবেটিসে ব্যবহারঃ 

মেজেস্ট্রল এসিটেট ব্যবহারে ডায়াবেটিক রোগীদের রোগের তীব্রতা বাড়তে এবং ইনসুলিনের চাহিদা বৃদ্ধি হতে দেখা গিয়েছে।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া: প্রতিকূল ঘটনাসমূহ যা দুইটি কর্মক্ষমতা বিবেচনার জন্য পরীক্ষার যে কোন একটিতে ঘটেছে এবং ওপেন ট্রায়ালের কমপক্ষে ৫% রোগীর মধ্যে ঘটেছে। ঘটনাসমূহ হল ডায়রিয়া, পুরুষের যৌন অক্ষমতা, ফুসকুড়ি, পেট ফাঁপা, উচ্চরক্তচাপ, দূর্বলতা, অনিদ্রা, বমি বমি ভাব, রক্তশূন্যতা, জ্বর, কামশক্তিহ্রাস, বুক জ্বালাপোড়া, হাইপারগ্লাইসেমিয়া, মাথা ব্যথা, বমি, নিউমোনিয়া এবং ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।

প্রতিকূল ঘটনাসমূহ যা দুইটি কর্মক্ষমতা বিবেচনার পরীক্ষায় ১% থেকে ৩% রোগীর দেখা দিয়েছে এবং যারা ১২ সপ্তাহের মধ্যে অন্তত একবার ফলোআপ এ এসেছে তা সিস্টেম অনুযায়ী তালিকাভূক্ত করা হয়েছে।

• সমস্ত শরীরঃ পেট ব্যথা, বুকে ব্যথা, সংক্রমণ, ক্যানডিডিয়াসিস এবং সার্কোমা

কার্ডিওভাসকুলারঃ কার্ডিওমায়োপ্যাথি ও বুক ধরফড় করা

• পরিপাকতন্ত্রঃ কোষ্ঠকাঠিন্য, অতিরিক্ত শুষ্ক মুখ, হেপাটোমেগালি এবং অতিরিক্ত লালা নিঃসৃত হওয়া

 • হেমিক এবং লিক্ষাটিক সিস্টেম: লিউকোপেনিয়া

বিপাকীয় এবং পুষ্টিগতঃ LDH এর মাত্রা বৃদ্ধি, শরীরে পানি আসা, বিষন্নতা

• স্নায়ুতন্ত্রীয়ঃ প্যারেসথেসিয়া, বিভ্রান্তি, খিচুনী, বিষন্নতা, স্নায়ুরোগ, হাইপ্যারেসথেসিয়া, অস্বাভাবিক চিন্তা

• শ্বসনতন্ত্রঃ শ্বাসকষ্ট, কাশি, ফুসফুসের ব্যাধি

• ত্বক ও অ্যাপেনডোজঃ টাক হওয়া, হারপিস, চুলকানি, ফুসকুড়ি, ঘাম এবং ত্বকের ব্যধি

• মূত্রতন্ত্র এবং জননতন্ত্রঃ এলবুমিনইউরিয়া, প্রস্রাবে অসংযম, মূত্রনালীর সংক্রমণ ও গাইনোকোম্যাশিয়া

গর্ভাবস্থায়:

গর্ভবতী মহিলাদের জন্য মেজেস্ট্রল এসিটেটের কোন পর্যাপ্ত এবং সুনির্দিষ্ট গবেষণা নেই। গর্ভাবস্থায় এই ঔষধ ব্যবহৃত হলে অথবা ব্যবহারকালীন সময়ে কেউ গর্ভবতী হলে, তাকে ভ্রুণের সম্ভাব্য ঝুঁকির ব্যাপারে অবগত করানো উচিত। সন্তান জন্মদানে সক্ষম মহিলাদের চিকিৎসাকালীন সময়ে গর্ভবতী হওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। 

জন্যদানকালে:

নবজাতকের উপর সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাবের কারণে চিকিৎসাকালীন সময়ে স্তন্যদান থেকে বিরত থাকা উচিত।

শিশু ও কিশোরদের ক্ষেত্রে ব্যবহার

শিশুদের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার তেমন কোন তথ্য নেই।

বয়স্কদের ক্ষেত্রে ব্যবহার

বয়স্ক রোগীদের জন্য ডোজ নির্ধারনের সময় সতর্ক হয়ে অল্প ডোজ দিয়ে চিকিৎসা শুরু করা উচিত। যেহেতু, এসব রোগীদের পূর্ববতী যকৃত, বৃক্ক, হৃদপিন্ডে সমস্যা থাকে অথবা অন্য পার্শ্ব-অসুখ থাকে এবং সে জন্য বিভিন্ন ধরণের ঔষধ গ্রহনের ইতিহাস থাকে। ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় বয়স্ক এবং কম বয়স্ক রোগীদের মধ্যে মেজেস্ট্রল এসিটেট এর প্রতিক্রিয়ার কোন পার্থক্য দেখা যায়নি। 

যেহেতু মেজেস্ট্রল এসিটেট বৃক্কের মাধ্যমে নিষ্কাশিত হয়, যাদের বৃক্কের জটিলতা আছে তাদের ক্ষেত্রে বিষাক্ত প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকবে। যেহেতু বয়স্কদের বৃক্কের জটিলতা হওয়ার প্রবণতা বেশী থাকে তাই তাদের ক্ষেত্রে ডোজ নির্ধারণের সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা ও বৃক্কের কার্যক্ষমতা পর্যবেক্ষণ করা উচিত।

অন্যান্য ঔষধের সাথে ক্রিয়া

ফার্মাকোকাইনেটিক পরীক্ষায় মেজেস্ট্রল এসিটেট ব্যবহারে জিডোভুডাইন এবং রিফাবিউটিন এর কার্যপদ্ধতিতে কোন পরিবর্তন দেখা যায়নি। তবে জিডোভুডাইন এবং রিফাবিউটিন এর কারণে মেজেস্ট্রল এসিটেটের কার্যপদ্ধতি পরীক্ষা করে দেখা হয়নি। মেজেস্ট্রল এসিটেট ওয়ারফেরিন এর সাথে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে এবং আইএনআর বাড়াতে পারে।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ

মাত্রাধিক্য দৈনিক ১২০০ মি.গ্রা. মেজেস্ট্রল এসিটেট দিয়েও কোন উল্লেখযোগ্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

সংরক্ষণ

আলো থেকে দূরে, ৩০° তাপমাত্রার নীচে ও শুষ্ক স্থানে রাখুন। সকল ঔষধ শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন। প্রতিবার সেবনের পূর্বে বোতল ভাল করে ঝাঁকিয়ে নিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url